[উত্সর্গ: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে]
সুবোধ ও অবোধের অল্প স্বল্প গল্প
সুবোধ ও অবোধ দুই বন্ধু। সুবোধ চালাক-চতুর, ভদ্র-নম্র ও বিনয়ী। আর অবোধ হলো সহজ-সরল, হাবা-গোবা ও সত্যভাষী। জীবন-যুদ্ধে দু'জনের আশা-নিরাশার মিল-ঝিলমিল। সুবোধ ইনিয়ে-বিনিয়ে 'জীবন-যখন-যেমন' তেমন করে পথ চলে! আর অবোধ অপ্রিয় সত্য-খুঁজে প্রায়ই আপদ-বিপদ ডেকে আনে। দু'জনেই মুক্তমনা, শিল্পমনা ও বেশ রাজনীতি-সচেতন। প্রবাসে বসবাস। কিন্তু ওদের হৃদয় জুড়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও 'বিশ্বভরা প্রাণ!' সময়-সুযোগে দু'জনের দেখা হলেই জমে ওঠে বিভিন্ন বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক। শুনুন তাহলে অবোধ ও সুবোধের এক চিলতে তর্ক-বিতর্কের অংশ বিশেষ ....
অবোধ: রাজনীতি হলো জনগনের সেবা। মাননীয় নেতারা দীর্ঘ ৫ বছর কোনো কাজ না করে জনগনের কোষাগার থেকে বেতন ও অপার সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। কী সেবা দিয়েছে তারা জনগনকে? অবরোধ! হরতাল! জালাও-পোড়াও! শোষণ-নির্যাতন! রাজনীতি কি পালাক্রমে লুটে-পুটে খাওয়ার পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনা? সুস্থ-সুন্দর রাজনীতি চাই। সাধারণ জনগনের উন্নতি চাই। প্রতিশ্রুতিশীল নতুন নেতৃত্ব চাই। যারা জনগনের সেবা প্রদানে দায়বদ্ধ।
সুবোধ: এক সময় বাঙ্গালীরা স্বপ্ন দেখে ছিল তারা শোষণ-মুক্ত হবে। সবার সমান অধিকার থাকবে। নেতারা কথা রাখেনি। তারা পালাক্রমে লুটে-পুটে নিজেরা বিত্তশালী হয়েছে। কারা নিয়ন্ত্রণ করছে এই দুষিত রাজনীতির চিত্রপট? কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, পরজীবি বকধার্মিক নেতা ও প্রতিপত্তিশালী স্বার্থনেষী সাম্রাজ্যবাদ। সবার লক্ষ্য হলো সীমিত সময়ে কে কতটা অর্থ সঞ্চয় করতে পারে! আজ পৃথিবীর ৯৫% সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ৫% পুঁজিবাদী। এই বিশ্ব-চিত্র বাংলাদেশেও সম্প্রসারিত! আর তাই বুঝি আজ সার্বিক-সুখ সুদূর 'সোনার হরিণ!'
অবোধ: রবীন্দ্রনাথ আশা করেছিলেন এই মানবসভ্যতার সংকট-সমাধানের উন্মেষ হবে ইউরোপ থেকে এবং সেই শান্তির ঢেউ একদিন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। কারণ ইউরোপ জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনায় অনেক এগিয়ে। রবীন্দ্রনাথ সেই স্বপ্নের বীজ বুনে গেছেন। নোবেল প্রাইজের অর্থে গড়ে গেলেন 'শান্তি নিকেতন!' আর দেখতে পাই রবীন্দ্র-ভাবনায় সুদূর জার্মানীতে গড়ে উঠেছে 'স্কুল অফ উইসডম!' চিন্তা-চেতনা ও দূরদর্শী ভাবনার মৃত্যু নেই। স্বপ্ন অবিনাশী। বিশ্ব-শান্তির সেই সংলাপ রবীন্দ্রনাথ শুরু করে গেছেন। তিনি বিশ্বকে নিয়ে ভেবেছিলেন বলেই বিশ্বকবি। এবিষয়ে আরো জানতে পাবেন এই লিঙ্কে: life2love.weebly.com/tagore.html. এখানে সংরক্ষণ করেছি বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য লিংক এবং ডকুমেন্টারী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ক্লাসেস ও কথোপকথন। এগুলি যতবার পড়েছি, শুনেছি ও দেখেছি ততবার মনে হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বিশাল দূরদর্শী ভাবনাকে আমরা আসলেই কতটুকু ধারণ করতে পেরেছি? মনে হয়েছে এগুলি অনুভব করলে আমরা আরো ভালো ভালো শিল্পকলা, শিল্পী ও বিকশিত মানুষ পেতাম যারা সমাজ পরিবর্তনে জীবনের ছন্দ খুঁজে পেতেন ও সহায়ক শক্তি হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারতেন।
সুবোধ: ঠিক বলেছিস। আর আরেকজন বাঙ্গালী নোবেল প্রাইজ পেলেন দরিদ্র-শোষণ ও সুদের ব্যবসায় সাফল্য দেখিয়ে! পৃথিবী এখন চলছে উল্টো পথে! এখানে এখন দাস-প্রথা বিলিয়ন-ডলার ব্যবসায় রুপ নিয়েছে। শোষণের মাত্রা সীমানা পরিয়েছে। অস্ত্র-সন্ত্রাস-যুদ্ধ-জঙ্গি ব্যবসা জমজমাট। তার পরেও বলবো আমাদের মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় আমাদের প্রাপ্তি অনেক। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির পরশ জীবন ছুঁয়েছে! অনেক ধনীরা ইদানিং বুঝতে শিখেছে এইসব ধন-সম্পত্তির মালিক শুধু তাদের নয়। তারা হাত-ভরে দিতে শিখেছে। অনেক গুণী শিল্পীরাও এখন মানুষের সুখ-শান্তির কথা ভাবছে। মানুষের মুক্তির জন্য কনসার্ট করছে। মুক্ত-মনা মানুষের প্রসার ঘটছে....। আর তাই রবীন্দ্র-ভাবনায় সুন্দর আগামী গড়ার প্রত্যয়ে এখনো স্বপ্ন দেখি 'আমার মুক্তি আলোয়, আলোয় এই আকাশে ....'
'...আমি অবাক হয়ে শুনি!' 'আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে...!'
♥♪♥
শফিউল ইসলাম
কেমব্রিজ, ওন্টারিও, কানাডা
২০১৫ জানুয়ারী ১৮
PC: FB Sweet Quotes Archive
সুবোধ ও অবোধের অল্প স্বল্প গল্প
সুবোধ ও অবোধ দুই বন্ধু। সুবোধ চালাক-চতুর, ভদ্র-নম্র ও বিনয়ী। আর অবোধ হলো সহজ-সরল, হাবা-গোবা ও সত্যভাষী। জীবন-যুদ্ধে দু'জনের আশা-নিরাশার মিল-ঝিলমিল। সুবোধ ইনিয়ে-বিনিয়ে 'জীবন-যখন-যেমন' তেমন করে পথ চলে! আর অবোধ অপ্রিয় সত্য-খুঁজে প্রায়ই আপদ-বিপদ ডেকে আনে। দু'জনেই মুক্তমনা, শিল্পমনা ও বেশ রাজনীতি-সচেতন। প্রবাসে বসবাস। কিন্তু ওদের হৃদয় জুড়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও 'বিশ্বভরা প্রাণ!' সময়-সুযোগে দু'জনের দেখা হলেই জমে ওঠে বিভিন্ন বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক। শুনুন তাহলে অবোধ ও সুবোধের এক চিলতে তর্ক-বিতর্কের অংশ বিশেষ ....
অবোধ: রাজনীতি হলো জনগনের সেবা। মাননীয় নেতারা দীর্ঘ ৫ বছর কোনো কাজ না করে জনগনের কোষাগার থেকে বেতন ও অপার সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। কী সেবা দিয়েছে তারা জনগনকে? অবরোধ! হরতাল! জালাও-পোড়াও! শোষণ-নির্যাতন! রাজনীতি কি পালাক্রমে লুটে-পুটে খাওয়ার পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনা? সুস্থ-সুন্দর রাজনীতি চাই। সাধারণ জনগনের উন্নতি চাই। প্রতিশ্রুতিশীল নতুন নেতৃত্ব চাই। যারা জনগনের সেবা প্রদানে দায়বদ্ধ।
সুবোধ: এক সময় বাঙ্গালীরা স্বপ্ন দেখে ছিল তারা শোষণ-মুক্ত হবে। সবার সমান অধিকার থাকবে। নেতারা কথা রাখেনি। তারা পালাক্রমে লুটে-পুটে নিজেরা বিত্তশালী হয়েছে। কারা নিয়ন্ত্রণ করছে এই দুষিত রাজনীতির চিত্রপট? কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, পরজীবি বকধার্মিক নেতা ও প্রতিপত্তিশালী স্বার্থনেষী সাম্রাজ্যবাদ। সবার লক্ষ্য হলো সীমিত সময়ে কে কতটা অর্থ সঞ্চয় করতে পারে! আজ পৃথিবীর ৯৫% সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ৫% পুঁজিবাদী। এই বিশ্ব-চিত্র বাংলাদেশেও সম্প্রসারিত! আর তাই বুঝি আজ সার্বিক-সুখ সুদূর 'সোনার হরিণ!'
অবোধ: রবীন্দ্রনাথ আশা করেছিলেন এই মানবসভ্যতার সংকট-সমাধানের উন্মেষ হবে ইউরোপ থেকে এবং সেই শান্তির ঢেউ একদিন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। কারণ ইউরোপ জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনায় অনেক এগিয়ে। রবীন্দ্রনাথ সেই স্বপ্নের বীজ বুনে গেছেন। নোবেল প্রাইজের অর্থে গড়ে গেলেন 'শান্তি নিকেতন!' আর দেখতে পাই রবীন্দ্র-ভাবনায় সুদূর জার্মানীতে গড়ে উঠেছে 'স্কুল অফ উইসডম!' চিন্তা-চেতনা ও দূরদর্শী ভাবনার মৃত্যু নেই। স্বপ্ন অবিনাশী। বিশ্ব-শান্তির সেই সংলাপ রবীন্দ্রনাথ শুরু করে গেছেন। তিনি বিশ্বকে নিয়ে ভেবেছিলেন বলেই বিশ্বকবি। এবিষয়ে আরো জানতে পাবেন এই লিঙ্কে: life2love.weebly.com/tagore.html. এখানে সংরক্ষণ করেছি বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য লিংক এবং ডকুমেন্টারী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ক্লাসেস ও কথোপকথন। এগুলি যতবার পড়েছি, শুনেছি ও দেখেছি ততবার মনে হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বিশাল দূরদর্শী ভাবনাকে আমরা আসলেই কতটুকু ধারণ করতে পেরেছি? মনে হয়েছে এগুলি অনুভব করলে আমরা আরো ভালো ভালো শিল্পকলা, শিল্পী ও বিকশিত মানুষ পেতাম যারা সমাজ পরিবর্তনে জীবনের ছন্দ খুঁজে পেতেন ও সহায়ক শক্তি হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারতেন।
সুবোধ: ঠিক বলেছিস। আর আরেকজন বাঙ্গালী নোবেল প্রাইজ পেলেন দরিদ্র-শোষণ ও সুদের ব্যবসায় সাফল্য দেখিয়ে! পৃথিবী এখন চলছে উল্টো পথে! এখানে এখন দাস-প্রথা বিলিয়ন-ডলার ব্যবসায় রুপ নিয়েছে। শোষণের মাত্রা সীমানা পরিয়েছে। অস্ত্র-সন্ত্রাস-যুদ্ধ-জঙ্গি ব্যবসা জমজমাট। তার পরেও বলবো আমাদের মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় আমাদের প্রাপ্তি অনেক। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির পরশ জীবন ছুঁয়েছে! অনেক ধনীরা ইদানিং বুঝতে শিখেছে এইসব ধন-সম্পত্তির মালিক শুধু তাদের নয়। তারা হাত-ভরে দিতে শিখেছে। অনেক গুণী শিল্পীরাও এখন মানুষের সুখ-শান্তির কথা ভাবছে। মানুষের মুক্তির জন্য কনসার্ট করছে। মুক্ত-মনা মানুষের প্রসার ঘটছে....। আর তাই রবীন্দ্র-ভাবনায় সুন্দর আগামী গড়ার প্রত্যয়ে এখনো স্বপ্ন দেখি 'আমার মুক্তি আলোয়, আলোয় এই আকাশে ....'
'...আমি অবাক হয়ে শুনি!' 'আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে...!'
'আগুনের
পরশমণি
ছোঁয়াও প্রাণে।
এ জীবন
পুণ্য করো
দহন-দানে।
আমার এই
দেহখানি
তুলে ধরো,
তোমার ওই
দেবালয়ের
প্রদীপ করো,
নিশিদিন
আলোক-শিখা
জ্বলুক গানে।
আগুনের
পরশমণি
ছোঁয়াও প্রাণে।
আঁধারের
গায়ে গায়ে
পরশ তব
সারা রাত
ফোটাক তারা
নব নব।
নয়নের
দৃষ্টি হতে
ঘুচবে কালো,
যেখানে
পড়বে সেথায়
দেখবে আলো,
ব্যথা মোর
উঠবে জ্বলে
ঊর্ধ্ব-পানে।
আগুনের
পরশমণি
ছোঁয়াও প্রাণে।'
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
♥♪♥
শফিউল ইসলাম
কেমব্রিজ, ওন্টারিও, কানাডা
২০১৫ জানুয়ারী ১৮
PC: FB Sweet Quotes Archive
A most important story with quotes of Tagore. Everybody on Earth should read.
ReplyDeleteI,Rupayan Bhattacharyya have written the comment just now.
DeleteI appreciate your lovely thoughts, Rupayan ♥♪♥
Delete