Friday, 19 July 2013

শুভ সার্ধশত জন্মবার্ষিকী প্রিয় কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

রিয়া দাশগুপ্তা :: Ria Dasgupta
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় : জন্ম – ১৯.০৭.১৮৬৩ (নদীয়া), মৃত্যু – ১৭.০৫.১৯১৩ (কলকাতা) বিশিষ্ট বাঙালি কবি, নাট্যকার ও সংগীতস্রষ্টা, তাঁর সাথে আমার প্রথম পরিচয় ‘ ধনধান্যে পুষ্পে ভরা ‘ গানটির ও ‘ নন্দলাল ‘ কবিতাটির মাধ্যমে | ‘ নন্দলাল ‘ কবিতাটি আমাদের বাংলা পাঠ্য বইতে ছিল | তবে কোন শ্রেণীতে ছিল সেটা এখন আর স্মরণ করতে পারছি না | বয়সের সাথে সাথে স্মৃতিশক্তিও লোপ পাচ্ছে ধীরে ধীরে | ছন্দের যাদুকর খ্যাত সতেন্দ্রনাথ দত্ত, যতিন্দ্র মোহন বাগচী প্রমুখের কবিতার মত ‘ নন্দলাল ‘ ও আমার প্রিয় কবিতাগুলোর মাঝে একটি | তাই কবিতাটির কিছু অংশ তুলে ধরলাম : ‘নন্দলাল তো একদা একটা করিল ভীষণ পণ- স্বদেশের তরে, যা করেই হোক, রাখিবেই সে জীবন। সকলে বলিল, ‘আ-হা-হা কর কি, কর কি, নন্দলাল’ ? নন্দ বলিল, ‘বসিয়া বসিয়া রহিব কি চিরকাল ? আমি না করিলে কে করিবে আর উদ্ধার এই দেশ ?’ তখন সকলে বলিল- ‘বাহবা বাহবা বাহবা বেশ !’ কবি মাত্র ৫ বছর বয়স থেকেই হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গাইতে শুরু করেন এবং ৯ বছর বয়স থেকেই তাঁর আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্গীত শিক্ষা শুরু হয় | দ্বিজেন্দ্র লাল ১৮৭৮-এ প্রবেশিকা পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করেন। এফ. এ. পাস করেন কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে | হুগলি কলেজ থেকে ১৮৮৩ সালে কলা বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৮৮৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ হতে এমএ ডিগ্রি পান | উচ্চ শিক্ষার্থে লন্ডনে গিয়ে তিনি রয়াল অ্যাগ্রিকালচারাল কলেজ ও অ্যাগ্রিকালচারাল সোসাইটি হতে কৃষিবিদ্যায় FRAS এবং MRAC ও MRAC ডিগ্রি অর্জন করেন | ভারতবর্ষে ফিরে তিনি জরিপ ও কর মূল্যায়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং মধ্যপ্রদেশে সরকারি দফতরে যোগ দেন | পরে তিনি দিনাজপুরে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ পান | ১৮৯০ সালে বর্ধমান এস্টেটের সুজামুতা পরগনায় সেটেলমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত অবস্থায় কৃষকদের অধিকার বিষয়ে তার সঙ্গে বাংলার ইংরেজ গভর্নরের বিবাদ ঘটে | পরবর্তীতে শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি সরকারি চাকরি হতে অবসর নেন | বাল্যকালে তিনি একটি সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে লালিত হয়েছিলেন। পিতা কার্তিকেয়চন্দ্র ছিলেন একাধারে সংগীতজ্ঞ, গায়ক ও লেখক। দ্বিজেন্দ্রলালের দুই অগ্রজ জ্ঞানেন্দ্রলাল রায় ও হরেন্দ্রলাল রায় – দু’জনেই ছিলেন লেখক ও পত্রিকা সম্পাদক | এরকম একটি পরিবেশে কৈশোরেই তিনি কবিতা রচনা শুরু করেন | তাঁর প্রথম গ্রন্থ প্রকাশ হয় যখন তাঁর বয়স মাত্র ১৯ বছর | তিনি পাঁচ শতাধিক গান লিখেছেন, যা দ্বিজেন্দ্রগীতি নামে পরিচিত |


তাঁর সাহিত্য কর্ম ও গ্রন্থ তালিকা : কাব্যগ্রন্থ : আর্যগাথা, ১ম খণ্ড (১৮৮৪), The Lyrics of India (ইংল্যান্ডে থাকাকালীন রচিত) (১৮৮৬ ), আর্যগাথা, ২য় খণ্ড (১৮৮৪), হাসির গান (১৯০০), মন্দ্র (১৯০২), আলেখ্য (১৯০৭), ত্রিবেণী (১৯১২) রম্য ও ব্যঙ্গাত্মক রচনা : একঘরে (১৮৮৯), সমাজ বিভ্রাট ও কাল্কি অবতার (১৮৯৫), ত্র্যহস্পর্শ (১৯০০), প্রাশচিত্ত (১৯০২), পূনর্জন্ম (১৯১১) গীতিনাট্য : পাষাণী (১৯০০), সীতা (১৯০৮), ভীষ্ম (১৯১৪) সামাজিক নাটক : পারাপারে (১৯১২), বঙ্গনারী (১৯১৬) ঐতিহাসিক নাটক : তারাবাঈ (১৯০৩), রাণা প্রতাপসিংহ (১৯০৫), দুর্গাদাশ (১৯০৬), নূরজাহান (১৯০৮), শাহজাহান (১৯০৯), চন্দ্রগুপ্ত (১৯১১) দ্বিজেন্দ্রলালের সাহিত্যে তার দেশপ্রেমের পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে | তাঁর কবিতার বিষয় মূলত দেশভক্তি, প্রেমভাব, তাত্ত্বিক ভাবনাচিন্তা ইত্যাদি | তাঁর লিখিত ও সুরারোপিত সঙ্গীত বাঙালির অতি প্রিয় ‘ দ্বিজেন্দ্র গীতি ‘ | *** তথ্য উপাদ্য : কিছু অংশ ও ছবি উইকিপেডিয়া থেকে

Like ·  · Follow Post · Share · July 19, 2012
  • 27 people like this.
  • Chaitali Goswami Ria nandolal kobita tai post koro na ekbar.. setai asol udjapon kara hobe..
  • Syamal Bhanjachaudhuri লেখাটি ভাল হয়েছে। কিন্তু তথ্য হিসাবে তাঁর কবিগুরুর সাথে মতান্তর ও তার ফলে তৎকালীন রবীন্দ্রঅনুরাগী বুদ্ধিজীবি মহলের তাঁর প্রতি বীতরাগের কথার উল্লেখ থাকলে লেখাটি সম্পূর্ণ হোত। কারন এই বীতরাগের ফলে তাঁর জীবৎকালেও তিনি বঙ্গকাব্যসমাজে অবহেলিত ছিলেন। এখনও অবহেলিত কারন আমরা সেই বীতরাগের ঐতিহ্যই বহন করে চলেছি। কবিগুরুর প্রতি সমস্ত শ্রদ্ধা নিয়েই বলতে চাই যে আমরা অন্ধ রবীন্দ্রঅনুসারী। আর কাউকে আমদের চোখেই পড়ে না।
  • Ria Dasgupta ধন্যবাদ আপনাকে


রিয়া দাশগুপ্তা :: Ria Dasgupta 
Kolkata
2013 July 19
::
Courtesy of 
Vision Creates Value
&
Facebook

No comments:

Post a Comment