মীজান রহমান
পাঁচ
এবার আমাদের পুরনো প্রশ্নে
ফিরে আসা যাক----বহুদেহী বস্তুর সমাবেশে প্রকৃতির নিয়মকানুন কোথায় দাঁড়ায়। আগেই বলেছি, এই কঠিন প্রশ্নটিতে কিভাবে বারবার ব্যাহত
হয়েছেন উনবিংশ শতাব্দীর বাধাবাঘা প্রতিভা। এবং স্বয়ং পয়েনক্লেয়ার সাহেবও (যিনি ওই শতাব্দীর, অনেকের মতে, সর্বকালের,
অন্যতম শ্রেষ্ঠ গাণিতিক হিসেবে পরিচিত) চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গিয়েছিলেন এই
দুরূহ সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়ে----পেপার ছাপা হবার পর তাতে সম্পূর্ণ ভুল
উপপাদ্যের ‘প্রমাণ’ আবিষ্কার করা যে কি লজ্জা সেটা আমি কিছুটা বুঝি। ভাগ্য ভাল যে সময় থাকতে ফ্রাগম্যানের মত একজন
শ্যনদৃষ্টিসম্পন্ন তূখোড় এবং তরুন গাণিতিকের হাতে গিয়ে পড়েছিল তাঁর পেপারটি, নইলে
হয়ত সেই ভুল অবস্থাতেই পয়েনক্লেয়ারের পেপার বলে পরিচিত একটি অসত্য ‘উপপাদ্য’
গণিতশাস্ত্রের এক কলঙ্কিত ইতিহাস হয়ে থাকত।
যাই হোক অবশেষে ওই পেপারটির
শেষরক্ষাই হয়নি কেবল, পয়েনক্লেয়ারের অসাধারণ গাণিতিক চিন্তাচেতনার এক সুবর্ণ দলিল
হিসেবে তাঁর পরিবর্তিত পেপারটি অমরত্ব লাভ করেছে। এতে তিনি যুক্তিপ্রমাণ দিয়ে অতি সহজবোধ্যভাবে দেখিয়ে
দিয়েছেন যে নিউটন সাহেবের তত্বাবলি অক্ষুণ্ণ থাকা সত্ত্বেও তাঁরই সৃষ্ট কলনপদ্ধতি
দিয়ে উর্ধাকাশের গ্রহনক্ষত্রাদির চালচলন বুঝে উঠা সম্ভব নয়----সেখানে সবসময়
সরলবুদ্ধি কার্যকারণ সম্পর্ক কাজ করে না। বরং ইউক্লিড-বহির্ভূত একপ্রকার
অদ্ভুত জ্যামিতিই যেন সেখানকার প্রচলিত ভাষা। এই অভিনব ভাষারই প্রাথমিক আভাস উঁকি দিয়েছিল
পয়েনক্লেয়রারের পরিমার্জিত পেপারে, যা পরবর্তিকালে টপলজিতে পল্লবিত হয়। তারো কিঞ্চিৎ আভাস আমি দিয়েছি এ-রচনার গোড়ার দিকেই। এবিষয়টি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন
বিজ্ঞান ও গণিতের এক প্রসিদ্ধ লেখক ইয়ান স্টুয়ার্ট। আমি এ-নিবন্ধে প্রধানত তাঁর বিবরণই(৩) অনুসরণ করেছি অধিকাংশ
সময় আমার বক্তব্য পেশ করার জন্যে।
পয়েনক্লেয়ার শুরুতে প্রায় হাল ছেড়ে
দিয়েছিলেন ত্রিদেহী গতিরেখার ছবি আঁকতে গিয়ে। সূর্যকে স্থির রেখেও চন্দ্র আর পৃথিবী মিলে অবিশ্বাস্য
জটিলতা সৃষ্টি করে দেয়----ওদের গতিপথগুলো
অসংখ্যবার পরস্পরকে ছেদ করে, যার ফলে ওদের গতির হদিস রাখা একেবারে সাধ্যাতীত হয়ে
পড়ে। সেসময় যে-কথাটি তাঁর মাথায় হয়ত পরিষ্কারভাবে
ফুটে ওঠেনি তা হল যে এই অসংখ্য ঠোকাঠুকির মধ্যেই লুকিয়ে ছিল কেয়সের পূর্বাভাস। পরে অবশ্য কেয়স শব্দটি স্পষ্ট করে খুলে না বললেও অন্যরা
ওই সূত্র ধরে পুরো আইডিয়াটি সংজ্ঞাবদ্ধ করে ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন। আরো একটি ঘটনা ঘটে, কচিৎ কদাচিৎ
যদিও, সেটি হল যে একটা আবদ্ধ গতিপথ তৈরি হয়ে যায়, অর্থাৎ সেখানে গতির পুনঃপৌনিকতা
প্রতিষ্ঠিত হয়। মানবজাতির
স্থিতিস্থাপকতার দিক থেকে ভাবতে গেলে এই পুনঃপৌনিকতাই আমাদের অস্তিত্বের শেষ ভরসা। সেকারণেই সূর্য-চন্দ্র-বিশ্ব এই ত্রিশক্তির মাঝেও
আমাদের জীবনে বছর ঘুরে বছর আসে, লিপ-ইয়ার হয় প্রায় ঘড়ির কাঁটা ধরে, এবং বিজ্ঞানীরা
দূর ভবিষ্যতের পূর্বাভাস দিতে পারেন। এই পুনঃপৌনিকতার
সন্ধান, এই অধিবৃত্তিক গ্রহপথের সন্ধানই ছিল পয়েনক্লেয়ার সাহেবের ইউক্লিডের বাইরে
নতুন জ্যামিতি সৃষ্টি করতে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য।
আমরা যদ্দিন পৃথিবীপৃষ্ঠে
শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করেই সন্তুষ্ট ততক্ষণ অন্য কোন বড় সমস্যার সম্মুখিন হওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই। কিন্তু মানুষ কখনোই এক জায়গায় স্থির থাকতে পারে
না----অজানাকে জানবার স্পৃহা আমাদের অন্তহীন। তাই মানুষ উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেছে, বেলুনে করে
আকাশভ্রমণ করতে চেয়েছে, শেষে এক গ্রহ থেকে আরেক গ্রহতে যাবার চেষ্টা করেছে। সেই চেষ্টারই রূপায়ন ঘটেছে চন্দ্রগ্রহের অভিযানে। প্রথমে চালকবিহীন, পরে চালকসহ----এক নয় একাধিক। প্রশ্ন হল ওই প্রথমবার যখন শূন্যযান পাঠানো হয় চাঁদের
দিকে, তখন নাসার প্রকৌশলীরা কিভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যানটিকে কোন রাস্তা ধরে
চালিত করবেন? এবং তাঁদের সেই সিদ্ধান্তগুলোর পেছনে কিসব যুক্তি তৈরি করা হয়েছিল? সাধারণ বুদ্ধিতে মনে হতে
পারে, কেন, সোজা চাঁদ বরাবর ছুঁড়ে মারলেই তো হয়। না, ব্যাপারটি তত সহজ নয়। প্রথমত ‘ চাঁদ বরাবর সোজা দিক’ বলে কোন দিক নেই। ভুলে গেলে চলবে না যে চাঁদ আমাদের চারপাশে ঘুরছে, সাথে
সাথে আমরাও ঘুরছি পৃথিবীর চারপাশে। অতএব আমাদের সোজা
দিকটিকে ঠিকমত বাঁকাতে না পারলে কখনও ওটা গন্তব্যে গিয়ে পৌঁছুবে না। দ্বিতীয়ত ভূপৃষ্ঠ থেকে চন্দ্রগহের দূরত্ব ৩৫৮,০০০
কিঃমিঃ(২২১,৮০০ মাইল) থেকে ৪০৮,৩০০কিঃমিঃ (২৫২,৫০০মাইল) পর্যন্ত উঠানামা করে,
আমাদের থেকে সূর্যের দূরত্ব যেমন গ্রীষ্মে কমে যায় আর শীতে বাড়ে। দুটোরই মূল কারণ হল অধিবৃত্তাকার কক্ষপথ উভয়েরই। সুতরাং এতটা পথ মহাশূন্যের অচেনা পথে ভ্রমণ করবার এমন
একটা রাস্তা খুঁজতে হয় যাতে, এক, সবচেয়ে কম খরচে উদ্দেশ্য সাধন করা যেতে পারে;
দুই, সময় বাঁচানো, বিশেষ করে যদি এক বা একাধিক চালক থাকে সাথে (তাদের স্বাস্থ্যের
কথা ভাবতে হবে, তাদের খাবারদাবার, তাদের নিরাপত্তা ইত্যাদি নানা বিষয় ওদের
বিবেচনায় রাখতে হয়); তিন, যাতে ফেরার পথে অনায়াসে ফেরা যায় চাঁদের আকর্ষণের বলয়
থেকে বের হয়ে, এবং যাতে ওজনহীন অবস্থায় কিছুক্ষণ ঝুলে থাকবার পর বিনা ঝাঁকুনিতে
পৃথিবীর আকর্ষণ ক্ষেত্রে প্রবেশ করা যায় নিশ্চিন্তে। এগুলো ছোটখাটো প্রশ্ন নয়----কমাণ্ড সেন্টারের বাঘা বাঘা
বিজ্ঞানী-প্রকৌশলী ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা এগুলো আদ্যোপান্ত বিবেচনা না করে মানুষ
চালিত যান আকাশে উড্ডীন হতে দেবেন না।
চাঁদে যেতে সোজা তাক করে যাত্রা
শুরু করার বড় সমস্যা হল প্রচণ্ডরকম জ্বালানি তেল খরচ হয় তাতে-----গোটা মিশনটা তখন
ব্যয়সাধ্যতার বাইরে চলে যায়। ভুলে গেলে চলবে না
যে পৃথিবী থেকে চাঁদের পথে রওয়ানা হতে প্রথম তার আকর্ষণ বলয় অতিক্রম করতে হয়, এবং
সেখানেই জ্বালানি শক্তি ব্যয় হয় সবচেয়ে বেশি। এই সমস্যাটির একটা ছোটখাটো সমাধান বের হয়েছে তথাকথিত
হোম্যান অধিবৃত্তবদল তত্বের মধ্য দিয়ে। আইডিয়াটি এরকম। পৃথিবী থেকে একটানে সোজা উপরে চলার পরিবর্তে প্রথমে
উর্ধমুখি হতে হতে পাশে, বৃত্তাকারে পৃথিবীর চারপাশে একবার ঘুরে তারপর আস্তে আস্তে
চাঁদের দিকে অগ্রসর হওয়া------সরলরেখায় নয়, একটি চিকন অধিবৃত্তের রেখা ধরে, এতে কম
তেল খরচ হয়। তারপর একটা জায়গায়
এসে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ দুর্বল হতে হতে যানটিকে ওজনহীন অবস্থাতে এনে দেয়। অর্থাৎ তখন পৃথিবী আর চন্দ্র দুয়ের আকর্ষণ থেকেই
অপেক্ষাকৃত মুক্ত আমাদের শূন্যযানটি----সেটা বেশ আরামের সময়। তেল প্রায় একেবারেই খরচ হয়না। তারপর ওকে আস্তে আস্তে চাঁদের দিকে চলতে শুরু করতে হবে। তবে একবারে নয়। প্রথমে চাঁদের চারদিকে একবার চক্কর দেওয়া-----ঠিক পৃথিবীর চারপাশে যেমন
ঘোরা হয়েছিল একবার। সেটাও ওই একই
উদ্দেশ্যে-----জ্বালানির খরচ কমানো। শেষে ধীরে ধীরে
কক্ষ বদল করে চাঁদের দিকে অগ্রসর হওয়া। ১৯৬০ আর ১৯৭০ এর
মাঝে যে কবার চাঁদে ভ্রমণ করা হয়েছিল, তার সবগুলিই এই নীতি পালন করেছে।
কিন্তু আধুনিক যুগের
শূন্যযাত্রীদের জন্য চন্দ্রগ্রহ এখন প্রায় ডালভাত। বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল দুটিই হুহু করে এগিয়ে গেছে। এতটাই অগ্রসর এযুগের প্রযুক্তি যে অতি সম্প্রতি নাসার
বিজ্ঞানীরা মঙ্গলগ্রহে একটি অনুসন্ধানী (যন্ত্রচালিত স্বভাবতই) যান পাঠাতে সক্ষম
হয়েছেন। সেখানে ব্যাপারটি তত সোজা নয়। প্রথমত মঙ্গলগ্রহের দূরত্ব গড়ে প্রায় ২২৫ মিলিয়ন কিঃমিঃ,
এবং গ্রহটির আকার এত বিশাল যে সেখানে একটি ৩৬৫ দিনবিশিষ্ট বছরের যে পৃথিবীতে আমরা
বাস করি তার তুলনায় ওটা ৬৮৭ দিন। সেখান থেকে
আলোরশ্মি পৃথিবী পর্যন্ত পৌঁছাতে লাগে তিন মিনিট, যেতে লাগে আরো তিন মিনিট। সেখানে যেতে কেবল নিউটন সাহাবের দ্বিদেহী তত্বের ওপর
ভরসা করে যাওয়া যাবে না, কারণ ওই দীর্ঘ পথে ভ্রমণ করতে গিয়ে পথিমধ্যে অনেক বাধাবিপত্তি
অতিক্রম করতে হবে। সেখানে সাধারণ ইউক্লিডিয়ান জ্যামিতিও বড় একটা কাজে আসে না। তার চেয়ে পয়নক্লেয়ার সাহেবের নতুন তত্ব ব্যবহার করা
অনেক লাভজনক। যাই হোক আমাদের
বর্তমান প্রসঙ্গের জন্যে এসব জটিল প্রশ্ন যতই আকর্ষণীয় হোক খুব একটা প্রাসঙ্গিক
হবে বলে মনে হয়না। আমার মনে হয়
আগ্রহী পাঠকের তৃষ্ণা মেটাবার জন্যে এবিষয়ের সত্যিকার বিশেষজ্ঞ যারা তাদের প্রণীত
গ্রন্থাদি খোঁজা উচিত-----আজকাল বাজারে অনেক বইই বের হয়েছে এসব বিষয়ের ওপর। সহজবোধ্য পাঠের জন্য গ্রন্থসূত্রতে
যে দুটি বই(৪ ও ৫) আমি উল্লেখ করেছি তার পৃষ্ঠাগুলো উল্টেপাল্টে দেখলেও হয়ত কিছুট
ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
এলেখাটি আমি শেষ করে দেব ভবিষ্যতে
যারা শূন্যভ্রমণ করার ইচ্ছা পোষণ করেন তাদের জন্যে কিছু টুকিটাকি খবর তুলে ধরা। মহাশূন্যে ভ্রমণ করতে গেলে এটা ধরেই নিতে হবে যে একটা
জায়গায় গিয়ে যাত্রীদের কোনও ওজন বলে কিছু থাকবে না----ভর থাকবে কিন্তু ওজন
কাটাকুটি হয়ে শূন্যতে চলে যাবে। কিন্তু সে
অবস্থাটি কতক্ষণ বজায় থাকবে সেটা নির্ভর করবে যানের গতি, অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহের
নৈকট্য কতদূর, এবং তাদের আকর্ষণ শক্তির জোর কতটা। শুধু তাই নয়, গ্রহ-উপগ্রহ কি একটি না একাধিক, এবং
একাধিক হলে তাদের সংখ্যা কত। সাধারণত উর্ধাকাশে
বহুসংখ্যক গ্রহ-উপগ্রহ এমনকি উল্কা ধূমকেতু এগুলোর সাক্ষাৎ পাওয়াও বিচিত্র কিছু নয়। কথা হল সে অবস্থায় শূন্যযানের চালককে কিধরণের পরিকল্পনা
নিয়ে অগ্রসর হতে হয়। মনে রাখতে হবেঃ
তেল বাঁচানো একটা জরুরি বিষয়----কোনক্রমে যদি তেল ফুরিয়ে যায় এক লক্ষ মাইল উপরে
তাহলে আপনাকে সরাসরি বিধাতার দরবার পৌঁছে
যেতে হবে-----স্ত্রী-পুত্র-কন্যাদের মুখ দেখার ভাগ্য হবে না আর। কিন্তু তেল বাঁচাতে কি করতে হয়? সেপ্রশ্নের সঠিক উত্তর
দিতে পারবেন প্রকৌশলীরা, যাঁরা পাহাড়ী রাস্তায় রেলগাড়ি চালানোর জন্যে পাহাড়ের গায়ে
রেল না বসিয়ে পাহাড়ের ভেতরে গর্ত করে সুড়ং তৈরি করেন----উদ্দেশ্য একই, এতে খরচ
বাঁচে অনেকগুণ। আধুনিক নগরজীবনে
অনেকেই পাতালট্রেন ব্যবহার করেন। পাতালট্রেন তৈরি করা হল কেন? কেবল যানবাহনের ভিড় লাঘব করার
উদ্দেশ্যেই নয়, খরচ বাঁচাবার জন্যেও অনেকখানি। অনুরূপভাবে শূন্যভ্রমনের বেলাতেও আজকাল ‘পাতাল ট্রেন’
বলে একটা অদ্ভুত আইডিয়া আলোচিত হচ্ছে। পাঠক নিশ্চয়ই সন্দিহান হয়ে উঠছেন ইতোমধ্যেঃ শূন্যে আবার
পাতাল এল কি করে? ঠিকই ধরেছেন, জাগতিক অর্থে পাতাল নেইও সেখানে, কিন্তু এখানে
‘পাতাল’ শব্দটি ব্যবহার করা হচ্ছে ভাবার্থে। এর সত্যিকার কোনও অস্তিত্ব নেই, গাণিতিকের কল্পনাতে মাত্র। শুধু তাই নয়, এর মাত্রাসংখ্যা তিনের চেয়ে বেশি, সাধারণত
পাঁচ থেকে সাত পর্যন্ত যেতে পারে (মাত্রা বলতে আমি ইংরেজির ডাইমেনসনকে বুঝাচ্ছি)। আসল ব্যাপারটা হল শূন্যের ‘পাতালপথ’ মানে যেখানে
জ্বালানি খুব কমই ব্যবহার করতে হয় অন্যান্য পথের তুলনায়, এবং যেখান থেকে এক গ্রহের
কক্ষপথ বদল করে অন্য গ্রহের কক্ষপথে স্থানান্তরিত হবার সুন্দর ব্যবস্থা আছে। অনেকটা টরন্টো-মন্ট্রিয়ল-নিউইয়র্কের পাতালট্রেনের এক
লাইনে করে একটা স্টেশনে যাবার পর সেখানে নেমে অন্য লাইনের ট্রেনে উঠে গন্তব্যে
পৌঁছানোর মত। এতে গোটা যাত্রাটি
খুব অল্প সময় ও ব্যয়ে শেষ করা সম্ভব হয়। আমাদের শূন্যভ্রমণের জন্যে ‘পাতালট্রেন’এর ধারণাটিও অনেকটা সেরকম। কম ঝামেলা, কম খরচ।
অবশ্য এ সবই এমুহূর্তে কল্পকাহিনী
ছাড়া কিছু নয়। কিন্তু আজকে যেটা
কল্পনা, দশ-পনেরো বছর পর যে সেটা বাস্তবে পরিণত হবে না কে বলবে সেকথা। অতীতের অনেক উদ্ভট কল্পকাহিনীই তো বাস্তবে রূপ পেয়ে গেল
এযুগের প্রযুক্তির কল্যানে। ভবিষ্যতে আরো কত
কি ঘটবে কে জানে!
তথ্যসূত্রঃ
(১) The Best of All Possible Worlds, by Ivar
Ekeland, University of Chicago Press, 2006; Paperback edition, 2007.
(২) Chaos, by James Gleick, Penguin Books
paperback edition, 1988.
(৩) In Pursuit of the Unknown, by Ian Stewart,
Basic Books, 2012.
(৪) The Hitchhiker’s Guide to the Galaxy, by
Douglas Adams, Published by Del Ray, 2005.
(৫) Across the Universe, by Beth Revis, Published
by Razorbill, 2011.
(৬) Internet.
মীজান রহমান
অটোয়া,
২২ শে আগস্ট, ‘১২
মুক্তিসন ৪১
No comments:
Post a Comment