[উৎসর্গ: আলোর দিশারী - দূর আকাশের তারা - বেগম সুফিয়া কামাল, ডা: অবলা বসু ও জগদীশচন্দ্র বসু]
শৈশব ও কৈশোরের সন্ধিক্ষণের মধুর দিনগুলো কেটেছে শৈলকুপা, ঝিনাইদহ। প্রায় প্রতিনিয়ত রাতে বিদ্যুৎ গেলে আমরা সবাই বেরিয়ে পড়তাম। সবাই মিলিত হতাম শৈলকুপা স্বাস্থ্য প্রকল্পের কাঁটা-তার বেষ্টিত সংরক্ষিত আবাসিক এলাকায়। এটা ছিল আমাদের অধীর-অপেক্ষার মধুর-মিলনমেলা। সবাই যেন আমরা বিদ্যুৎ যাবার অপেক্ষায় থাকতাম। কখন আবার আমরা সবাই একসাথে খেলবো, গাইবো, নাচবো ও জীবনের গল্প শুনবো।
বিফু'র কাছ থেকে শেখা - প্রকৃতি প্রেম
সত্তর দশকের কথা। কবি গোলাম মোস্তফা সড়কের এক পাশে শৈলকুপা স্বাস্থ্য প্রকল্প - আর এক পাশে আমাদের আস্তানা 'রৌদ্র-ছায়া'। আমরা মূলতঃ মিলিত হতাম শৈলকুপা স্বাস্থ্য প্রকল্পের প্রশাসকের বাসার সামনের খেলার মাঠে। এখানে আমরা অনেক রকমের খেলা খেলেছি। কখনো ব্যাডমিন্টন, ভলিবল, ডাং-গুলি, সাত-চাড়া, বৌচি, দাবা, লুডু, পাঁচ-গুটি; কখনো গান-গল্প শুনতে শুনতে সময় কেটেছে। আমার সহপাঠির শ্রুতিমধুর গানের গলায় আমরা বার বার শুনেছি:
---'আমার গানের মালা আমি করবো কারে দান ...।'
---'আকাশের ওই মিটি-মিটি তারার সনে কইবো কথা ...।'
---'চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে ...।'
---'পাগলা হাওয়ার, বাদল দিনে ...।'
এখানেই বিফু'র সাথে আমার পরিচয়। আমার সহপাঠির ফুফু। মায়া-মমতায় বিফু অনন্য। 'বিফু' হলেন বিউটি ফুফু। আমাদের মিলনমেলার সবার অগ্রজ। অভিভাবক। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। সবার পরম-শ্রদ্ধার বিফু। বিফু'র কাছ থেকে আমরা জীবন-বোধের গল্প শুনতাম। বিফু ছিলেন স্বল্পভাষী। একদিন খেয়াল করি বিফু - মশাগুলোকে উড়িয়ে দিচ্ছেন - কিন্তু মারছেন না। মশা ও ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র কীট-পতঙ্গদের জীবন-প্রকৃতির প্রতিও রয়েছে বিফু'র অপার মায়া-মমতা। সেই থেকে আমিও শিখে নিয়েছি প্রকৃতিতে সবার শান্তি-পূর্ণ সহ-অবস্থানের সমান অধিকারের বিষয়টি।
আমি অবাক হয়ে খেয়াল করেছি - মশাগুলো ও যেন বিফু'কে কৃতজ্ঞতার পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে - গান শুনিয়ে যাচ্ছে। আজ দূর-প্রবাসে বসে বিফু'র মনের বিশালতার কথা বিশেষভাবে মনে পড়ছে। বিফু, তুমি নিশ্চয় বেশ কষ্ট পেয়েছ - যখন দেখেছ ধর্মান্ধরা গাছ-কেঁটে মানুষের এগিয়ে যাবার পথে বাঁধা সৃষ্টি করছে। যে গাছগুলো অনেক ক্লান্ত পথিক-কে অনাবিল ছায়া দিয়ে প্রাণ জুড়িয়েছে - শ্রান্তি দিয়েছে শর্তহীন শর্তে। আশা করি ওরাও একদিন তোমার জীবনের গল্প শুনবে। মানুষ হয়ে উঠবে। তোমার কাছেই শিখেছি - ফুল ছিড়তে নেই। কীভাবে ফুলের মত ফুটতে হয়।
শৈশব ও কৈশোরের সন্ধিক্ষণের মধুর দিনগুলো কেটেছে শৈলকুপা, ঝিনাইদহ। প্রায় প্রতিনিয়ত রাতে বিদ্যুৎ গেলে আমরা সবাই বেরিয়ে পড়তাম। সবাই মিলিত হতাম শৈলকুপা স্বাস্থ্য প্রকল্পের কাঁটা-তার বেষ্টিত সংরক্ষিত আবাসিক এলাকায়। এটা ছিল আমাদের অধীর-অপেক্ষার মধুর-মিলনমেলা। সবাই যেন আমরা বিদ্যুৎ যাবার অপেক্ষায় থাকতাম। কখন আবার আমরা সবাই একসাথে খেলবো, গাইবো, নাচবো ও জীবনের গল্প শুনবো।
বিফু'র কাছ থেকে শেখা - প্রকৃতি প্রেম
সত্তর দশকের কথা। কবি গোলাম মোস্তফা সড়কের এক পাশে শৈলকুপা স্বাস্থ্য প্রকল্প - আর এক পাশে আমাদের আস্তানা 'রৌদ্র-ছায়া'। আমরা মূলতঃ মিলিত হতাম শৈলকুপা স্বাস্থ্য প্রকল্পের প্রশাসকের বাসার সামনের খেলার মাঠে। এখানে আমরা অনেক রকমের খেলা খেলেছি। কখনো ব্যাডমিন্টন, ভলিবল, ডাং-গুলি, সাত-চাড়া, বৌচি, দাবা, লুডু, পাঁচ-গুটি; কখনো গান-গল্প শুনতে শুনতে সময় কেটেছে। আমার সহপাঠির শ্রুতিমধুর গানের গলায় আমরা বার বার শুনেছি:
---'আমার গানের মালা আমি করবো কারে দান ...।'
---'আকাশের ওই মিটি-মিটি তারার সনে কইবো কথা ...।'
---'চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে ...।'
---'পাগলা হাওয়ার, বাদল দিনে ...।'
এখানেই বিফু'র সাথে আমার পরিচয়। আমার সহপাঠির ফুফু। মায়া-মমতায় বিফু অনন্য। 'বিফু' হলেন বিউটি ফুফু। আমাদের মিলনমেলার সবার অগ্রজ। অভিভাবক। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। সবার পরম-শ্রদ্ধার বিফু। বিফু'র কাছ থেকে আমরা জীবন-বোধের গল্প শুনতাম। বিফু ছিলেন স্বল্পভাষী। একদিন খেয়াল করি বিফু - মশাগুলোকে উড়িয়ে দিচ্ছেন - কিন্তু মারছেন না। মশা ও ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র কীট-পতঙ্গদের জীবন-প্রকৃতির প্রতিও রয়েছে বিফু'র অপার মায়া-মমতা। সেই থেকে আমিও শিখে নিয়েছি প্রকৃতিতে সবার শান্তি-পূর্ণ সহ-অবস্থানের সমান অধিকারের বিষয়টি।
আমি অবাক হয়ে খেয়াল করেছি - মশাগুলো ও যেন বিফু'কে কৃতজ্ঞতার পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে - গান শুনিয়ে যাচ্ছে। আজ দূর-প্রবাসে বসে বিফু'র মনের বিশালতার কথা বিশেষভাবে মনে পড়ছে। বিফু, তুমি নিশ্চয় বেশ কষ্ট পেয়েছ - যখন দেখেছ ধর্মান্ধরা গাছ-কেঁটে মানুষের এগিয়ে যাবার পথে বাঁধা সৃষ্টি করছে। যে গাছগুলো অনেক ক্লান্ত পথিক-কে অনাবিল ছায়া দিয়ে প্রাণ জুড়িয়েছে - শ্রান্তি দিয়েছে শর্তহীন শর্তে। আশা করি ওরাও একদিন তোমার জীবনের গল্প শুনবে। মানুষ হয়ে উঠবে। তোমার কাছেই শিখেছি - ফুল ছিড়তে নেই। কীভাবে ফুলের মত ফুটতে হয়।
আবার যখন কখনো লোড শেডিং বা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হবে, এরকম কোনো মিলন-মেলায় - খুঁজে নিও কোনো এক অন্ধকারের জোনাকী - আলোর দিশারী, বিফু-কে। আসলেতো আমরা যে যাই খুঁজি তাই পাই...। তাই নয়কি? আমাদের চারপাশে অনেকেই প্রতিনিয়ত সুচিন্তার চর্চা না করে কুচিন্তার বেড়াজাল বুনে চলেছে। যা থেকে মুক্তি পেতে এখনো খুঁজে ফিরি মায়া-মমতায় অনন্য অন্ধকারের জোনাকী - আলোর দিশারী, বিফু-কে। চিরকাল আলো খুঁজেছি। আলো পেয়েছি। 'আমার মুক্তি আলোয় আলোয় ...।'
সেই 'রৌদ্র-ছায়া'র এক টুকরো স্মৃতি - আমার ক্যামরায়, নব্বই দশকে।
কবি গোলাম মোস্তফা সড়ক, কবিরপুর, শৈলকুপা, ঝিনাইদহ।
কবি গোলাম মোস্তফা সড়ক, কবিরপুর, শৈলকুপা, ঝিনাইদহ।
♥♪♥
শফিউল ইসলাম
কেমব্রিজ, অন্টারিও, ক্যানাডা
২০১৪ মে ৩১
Courtesy of:
Life2Love
ShafSymphony
Vision Creates Value
No comments:
Post a Comment