[উৎসর্গঃ ইকরামুল হক টপী-কে। ধর্মান্ধ বর্বরতার কারণে আমরা বঞ্চিত হলাম টপীর মেধার আলো থেকে!]
শফিউল ইসলাম
১৯৮১-৮২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববদ্যালয়ের অধীনে কলেজ অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজীতে ভর্তি হই। প্রতিকুল রাজনৈতিক পরিবেশে আমাদের ছাত্রজীবন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। ১৯৮৯ সালে টেক্সটাইল কলেজ থেকে আমি পাশ করে বের হই। পথ খুঁজেছি কিভাবে আমরা আমাদের শেখার পরিবেশ আরো সুন্দর ও সুগম করে যেতে পারি।
সে সময় প্রতি বছর মাত্র ৫০ জন ছাত্র/ছাত্রী টেক্সটাইল ডিগ্রী প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পেতো। তখন অনেক মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীর সমাবেশ হতো টেক্সটাইল কলেজে। কিন্তু প্রতিকুল পরিবেশের কারণে অনেকেই টেক্সটাইল কলেজ ছেড়ে যেতো।
এমন একজন দূরদর্শী অতি মেধাবী ছাত্র - ইকরামুল হক টপী।
টপী ছিলো মুক্তমনা - যুক্তি-তর্কে তুখোড়। টেক্সটাইল কলেজের বৈরী পরিবেশ ছিলো ওর জ্ঞান-চর্চা, সত্য সাধনা ও বিকাশের পথে বড় বাঁধা। ধর্মান্ধরা ওকে একদন্ড শান্তি দেয়নি। একদিন ধর্মান্ধরা মেরে ওর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে এসেছে বিচার চাইতে। আমরা ওর বিচার করতে পারিনি।
তখন টেক্সটাইল কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন ড: মুস্তাফিজুর রহমান। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সন্ত্রাসের কাছে উনিও ছিলেন আমাদের মতো অসহায়।
দেশ, মাটি ও মানুষকে টপী কেমন ভালোবাসতো? নীচের লিন্কটা ক্লিক করুন। শফিকুল ইসলাম বাহারের আবৃত্তিতে শুনুন টপীর একটি কবিতা 'শব্দের শব্দ শুনি' এলবাম থেকে।
১৯৮৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে আমরা এটা প্রকাশ করি প্রীতিলতা প্রকাশনীর সৌজন্যে। কী অপূর্ব টপীর চিন্তা-চেতনা ও দুরদর্শীতা। অজানাকে জানার জন্য টপীকে দেখেছি অনেক পড়াশুনা করতে। ওর জ্ঞান-পিপাসায় আমি বিমোহিত। ওকে দেখেছি ড: আহমদ শরীফের বাসায় বৃহস্পতিবারের মুক্ত-আলোচনার আসরে। ওকে দেখেছি বিতর্ক প্রতিযোগিতায়, কিংবা সেমিনারে।
১৯৯১ সাল থেকে আমি দেশের বাইরে। যতবার দেশে গিয়েছি - টপীকে খুঁজেছি। ওকে খুঁজে পাইনি। কেউ ওর খোঁজ দিতে পারেনি। আসুন আমরা আমাদের মেধাবীদের পাশে দাঁড়াই। বাঁচতে শিখি। উন্নত দেশ গড়ি।
Courtesy of: Vision Creates Value
No comments:
Post a Comment