Sunday 30 November 2014

তপন রায় চৌধুরী ♥♪♥ Tapan Ray Choudhury






তপন রায় চৌধুরী  PC: FB Hrithkômōl Kômōlasur
LikeLike ·  · Stop Notifications · Share
  • Shafiul Islamhttps://www.facebook.com/photo.php?fbid=814713668563334&set=a.102463983121643.5897.100000741268009&type=1&pnref=story
    তপনদার সঙ্গে কাঙ্খিত শেষ আড্ডাটা আর হল না!
    মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। আজ অনেক দিন পরে তপন রায়চৌধুরিকে ফোন কলাম। প্রায় তিন মাস পরে। তিন মাস ধরে ভয়ে ভয়ে আজ করি কাল করি করছি। অথচ এক সময়ে প্রায়ই কথা হতো। আসলে লম্বা ফোনালাপ হত। ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহেই গল্প হত, বিভিন্ন বিষয়ে। এর পর নানা ঝামেলায়, বাড়িবদল, ফোন বদলে লম্বা বিরতি পড়ে। এর পর যোগাযোগ হলেও যাকে বলে ফিউয়ার এ্যাণ্ড ফার বিটুইন। এরকম দীর্ঘ বিরতির পর তিন সাড়ে তিন মাস আগে ফোন করলে তাঁর মেয়ে সুকন্যা ফোন ধরে জানালো ‘বাবা তো এখনো হাসপাতালে’! স্ট্রোক [cerebral stroke], বেশ কিছু কয়েক মাস ধরেই হাসপাতালে। জানিয়েছিল ‘এখন অবস্থা অনেক ভাল।’ কিছু দিনের মধ্যেই ছাড়া পাবে। ডাক্তাররা নাকি জানিয়েছে প্রায় সুস্থ হয়ে যাবে। আলমোস্ট ফুল রিকাভারি! সপ্তাহ দুয়েক পরে ফোন করলেই কথা বলা যাবে জানালো। আর এনিয়ে ফেসবুক বা কোথাও আলোচনা করতে না করেছিল, কেন জানি না।
    সেই থেকে দ্বিধা, সংকোচ আর ভয়ের মধ্যে ছিলাম। দেখতেও যাওয়া হয় নি। আজ শনিবার ফোন করলাম। বৌদি ফোন ধরলেন। আগে সব সময়ে ফোন করলেই তপনদা ফোন ধরেছেন। তার সঙ্গে কথা বলার পর, তার অবস্থা শুনে এতোই ডিপ্রেসডবোধ হল যে, আমার আর তপনদার সঙ্গে কথা বলার সহস হল না। যদিও বার তিনেক তিনি বললেন আমি ফোন দিচ্ছি দেখ কথা বলে...! আসলে তিনি কথা বলতে পারেন ঠিকই, কিন্তু তার অর্থ বোঝা দুঃসাধ্য। তার উপর ক্ষীণস্মৃতি। বৌদিকে কথা দিলাম একদিন গিয়ে দেখে আসবো। কিন্তু কি দেখবো? শেষ দেখা?
    তপনদা সঙ্গে আমার সঙ্গে আমার সখ্য বেশি দিনের না। দেখা-সাক্ষাত হাতে গোনা কয়েক বারের। কিন্তু ফোনে আলাপ-আলোচনা-আড্ডা শত শত ঘন্টার। বেশির ভাগ আলোচনার বিষয় ছিল, সামাজিক ইতিহাস অবশ্যই। জাত, জাতীয়তাবাদ, আত্মপরিচয়ের রাজনীতি তার সঙ্গে ‘সাম্প্রদায়িকতা’, ভারত-এর জাতিরাষ্ট্র হওয়া এবং অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ। উল্ল্যেখ্যে, তপন রায়চৌধুরী ও অমর্ত্য সেন দুজনে, ছয় বছরের ছোট বড় হলেও, খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। দুজনেই একই জাহাজে বিলাতে এসেছিলেন পড়াশুনা করতে। এবং দুজনেই পারিবারিক ভাবে রবীন্দ্রিক পরিমন্ডলে বড় হয়েছেন। পারিবারিক সম্পর্ক বাদেও সেনের মা অমিতা সেন এবং তপনদার স্ত্রী হাসি দুজনেই শান্তিনিকেতনে গান শিখেছেন রবীন্দ্রনাথের কাছে।
    তপনদা ডাকলেও বয়সে তিনি প্রায় আমার পিতৃস্থানীয় ছিলেন। আমার বাবার সঙ্গে তাঁর বয়সের ব্যবধান মাত্র ৫/৬ বছরের। অথচ কি নির্দ্বিধায় সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিয়েছি তর্ক-বিতর্ক করেছি তাঁর সঙ্গে। সব চেয়ে বড় কথা তিনি সেটা উপভোগ করতেন। কোন বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হলে কখনও রাত দশটা বা সাড়ে দশটায়ও তাঁকে ফোন করে করেছি। মূল প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার আগে এত রাতে ফোন করার জন্য বিনয় বা মার্যনা প্রকাশ করতে গেলেই বলতেন “আরে বল বল...আসল কথা বল...!”
    ‘বাঙালনামা’ বইয়ে তাঁর এক রহস্যময় ফারসী শিক্ষকের বর্ণনা আছে। যার নামটি পর্যন্ত আসল না বলেছেন তিনি এবং তার মূল লক্ষ্য ছিল যেনতেন উপায়ে অর্থ যোগাড় করে বিলাত গিয়ে আইন পড়ে ব্যারিস্টার হওয়া বা আইনশাস্ত্রে পিএইচডি ডিগ্রী হাসেল করা। সমস্ত তথ্য বিবেচনা করে আমার মনে হল আরে এই লোক তো ড. আলীম আল রাজী না হয়ে যায় না। যদিও বাঙালনামায় তার নাম ভিন্ন। তপনদাকে বললে তিনি আমাকে একটু খোঁজ খবর করতে বললেন। তার কথা মত আলীম আল রাজী’র সব বৃত্তান্ত সংগ্রহ করে দিলে, তিনি জানান যে ইনি-ই তার ফার্সি শিক্ষক বটে। কিন্তু বিস্মিত হন যেনে, যে তাঁর চেনা রাজী বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন [ড. আলীম আল রাজী ভাসানী ন্যাপ এর ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছিলেন]!
    তপ্নদা সব কিছু খোলামেলা আলাপ করলেও দুটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যেতেন। তার একটা হল বৃটিশ সাম্রাজ্যের উপনিবেশ না হলে ভারত একীভূত জাতিরাষ্ট্র হত কি না। আরেকটা ছিল ভারতের জাতীয়সংগীত ‘জন গণ মন অধিনায়ক’ ঘিরে যে বিতর্ক যে ৫ম জর্জের ভারত সফরোপলক্ষে এটা রচিত হয়। শেষমেশ একদিন চেপে ধরলাম, এই বলে যে আপনার বইয়ে এরিখ হবসবাওম থেকে শুরু করে সব উদার-বাম ঘরানার ইতিহাসবিধ ও ইন্টেলেকচুয়ালদের সান্নিধ্যে ও তারিফে ভরপুর অথচ কেন আপনি বৃটিশ উপনিবেশ না হলে আজ ভারত জাতিরাষ্ট্র হিসেবে যেটা আমরা জানি সেটা হত কি না, সে বিষয়ে এড়িয়ে যান; আজ আপনাকে বলতেই হবে। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন তোমার কি ধারণা। আমি বললাম আমার মত। তিনি বললেন, একক ভারত রাষ্ট্র হত না বলেই মনে হয়। কিন্তু আমি কংগ্রেসি ন্যাশনালিস্ট ব্যাকগ্রাউণ্ড থেকে এসেছি তাই এ প্রসঙ্গ আমি খুব সাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। কিন্তু ‘জন গণ মন অধিনায়ক’-এর প্রশ্নে কখনোই শুনতেও রাজি ছিলেন না। ‘ও বাদ দাও, ওসব বাজে কথা’। অথচ তিনি রবীন্দ্রনাথকে ঘিরে হরেক সঙ্গতি-অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধীতার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের নাম জড়িত হওয়া, এমন কি তার ‘বিশ্বকবি’ অভিধার অসম্মানকর দিক নিয়েও।
    ২০১১ থেকে অসংখ্যবার তিনি শনি বা রবি বার করে অক্সফোর্ডে যেতে বলেছেন। অসংখ্যবার বলেছি এই সামনের মাসে আসব। লণ্ডনে এক মদন সঙ্গে যেতে আগ্রহী হয়েছিল। ইচ্ছে ছিল কয়েক পর্বের দিনভোর আড্ডা রেকর্ড করে রাখবো। কিন্তু এখন শুধু তার মুখটা দেখতে যাওয়ার দায়।
  • Shafiul Islamhttps://www.facebook.com/photo.php?fbid=10154881307285243&set=a.10152155166010243.911851.534295242&type=1&theater
     স্বপ্নেই বিলীন হয়ে গেল। বরিশালের (যতদূর মনে পড়ে কীর্তিপাশার) জমিদার পরিবারের সন্তান, দেশ বিভাগের সদা অন্তঃ ক্ষরণ বুকে নিয়েই বেঁচে ছিলেন সারা জীবন। তিনি ছিলেন ভারতীয় ও বঙ্গীয় ইতিহাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত। ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত অক্সফোর্ডে ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। ইতিহাসে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। তাঁর মহা কর্মযজ্ঞের স্বীকৃতি ও সম্মান পেয়েছেন বিশ্বব্যাপী। ব্যক্তিগত জীবনে আদ্যোপান্ত আড়ম্বরহীন, নিখাদ বাঙালি, ভ্রমণ প্রেমিক, নাস্তিক, ধর্মনিরপেক্ষ, মানবতাবাদী ও উদার আদর্শের অনুসারী একজন মহামানব ছিলেন তপন রায় চৌধুরী। জীবনের শেষ মূহুর্ত্ত পর্যন্ত তিনি ভাল বেসেছেন বাংলা ও বাঙ্গালিকে। তবে তাঁর হৃদয়ের গভীর অলিন্দে আজীবন সুরক্ষিত সুন্দরতম স্বপ্ন ও ভালবাসার নামটি ছিল বরিশাল।

3 comments:

  1. Always look forward for such nice post & finally I got you. Really very impressive post & glad to read this. Good luck & keep writing such awesome content. Best content & valuable as well. Thanks for sharing this content.
    Web Development Company in Greater Noida
    Software development company In Greater noida

    CMS and ED
    CMSED

    Homoeopathic treatment for Psoriasis in greater noida

    ReplyDelete
  2. i heard about this blog & get actually whatever i was finding. Nice post love to read this blog
    GST consultant In Indore
    digital marketing consultant In Indore

    ReplyDelete
  3. Writing this type of article is one of the Buy Instagram accounts things you will ever learn. This is the type of article you will use to build your reputation as an author and also one that will help you get started in a career that is very profitable. Many people will ask me what I consider to be the most important part of this type of article. The answer is simple, the title. You need to create a quality title for your article before submitting it for publication.

    ReplyDelete