মূল রচনা
ডাক্তার ভাইয়ের হাসপাতালে
একজন
ভিনদেশি শুভ্রকেশ চিকির্যাসক, যাঁর মনটাও একই রকম সফেদ! আর কিছু মানুষ,
যাঁদের মন তাঁদের ঘরগুলোর মতোই মাটিতে গড়া! সবাই মিলে পরিচালনা করছেন
কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার এই
ব্যতিক্রমী হাসপাতাল ঘুরে লিখেছেন রুবেল হাবিব ও মো. সাইফুল্লাহ
আলাপচারিতার শুরুতেই ‘ডাক্তার ভাই’য়ের কড়া অনুরোধ, ‘আপনাদের লেখার মূলকথা যেন আমাকে নিয়ে না হয়।’ তবে কি শুধু আপনার হাসপাতাল নিয়ে লিখব? এমন প্রশ্নেও তাঁর আপত্তি। হাসিমুখে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালটা তো আমার না! এই হাসপাতালের পরিচালক হলো গরিব সমাজকর্মী ও সমর্থকরা। তবে হ্যাঁ, এদের দলনেতা আমি।’
১৯৭৬ সালে প্রথম মাত্র এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে আসেন নিউজিল্যান্ডের ডা. এডরিক বেকার। বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে তিনি খুঁজছিলেন এমন একটা জায়গা, যেখানে তিনি প্রকৃত অর্থে সুস্বাস্থ্যের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবেন। বেশ কিছু দেশ ঘুরে আবারও বাংলাদেশে ফিরলেন ১৯৭৯ সালে। সেই থেকে আছেন এ দেশেই। অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে কাজ করছেন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। এত বছরে শত সমস্যা-সংকট পেরোতে গিয়ে কখনো মনে হয়নি, ‘এখানে আর কাজ করা সম্ভব না, এবার নিজ দেশে ফিরব’? প্রশ্ন শুনে আবারও হাসেন এই সফেদ চুলের মানুষটি; বলেন, ‘আমি তো এমন একটা জায়গাই খুঁজছিলাম, যেখানে কাজ করতে গেলে বারবার বাধা আসবে। বাধাবিপত্তি তো আমার চলে যাওয়ার কারণ হতে পারে না!’
৩২ বছর, অনেকটা সময়। বাংলাদেশ যে কতটা আপন হয়ে গেছে, সে প্রমাণ মেলে তাঁর কথায়, ‘আমার মন-অন্তর এখানে আছে। নিজের দেশকেই এখন বিদেশ মনে হয়!’ গ্রামের সাদাসিধে মানুষগুলোও তাঁর খুব চেনা। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘এরা খুব আন্তরিক। অনেক সময় এমন হয়েছে, রোগী মারা গেছে, অথচ এরা বলে, “আপনারা এত চেষ্টা করলেন!” তারা খুব কৃতজ্ঞ।’
ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়
গাছের ফাঁক গলে সকালের রোদ যখন উঁকিঝুঁকি মারছে, টিনের ঘরটায় তখন বেশ কিছু মানুষ। ঘরের বাইরে কাঠের তক্তা দিয়ে বানানো বেশ কয়েকটা বেঞ্চ। তারই একটায় বসে অপেক্ষা করছিলেন শাহনাজ বেগম। পাশে যে ভ্যানটার ওপর বিছানা পাতা, তাতে চড়েই এখানে এসেছেন তিনি। ব্যথায় কাতর, কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। তবু খানিকটা যে স্বস্তি অনুভব করছেন, চোখেমুখে সে ভাব স্পষ্ট। যেন এখানে আসতে পেরেই অর্ধেক সুস্থ! সাতসকালেই শাহনাজের মতো কাঠের বেঞ্চ দখল করে অপেক্ষা করছিলেন আরও অনেকে। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প নামের হাসপাতালের প্রতিদিনকার কর্মদিবসের শুরুটা এমনই।
এখানে দিনের শুরু হয় পাখির ডাকে। চারপাশের গাছগাছালি থেকে নাম না-জানা অসংখ্য পাখি ঘুম ভাঙায় রোগীদের। বহির্বিভাগে নতুন রোগী এলে টিকিট কাটতে হয়। নতুন রোগীর জন্য টিকিটের মূল্য ২০ টাকা এবং পরবর্তীকালে ১০ টাকা। তবে রোগী যদি গ্রাম কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হন, সে ক্ষেত্রে টিকিটের মূল্য ৫ থেকে ১০ টাকা। কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগীকে পাঠানো হয় নির্দিষ্ট প্যারামেডিকের কাছে।
ছোটখাটো অসুখের ক্ষেত্রে প্যারামেডিকরাই বাতলে দেন রোগনিরাময়ের উপায়। জটিল কোনো রোগের ক্ষেত্রে আছেন এমবিবিএস ডাক্তার। বর্তমানে কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্পে ডা. বেকার ছাড়াও আছেন জাপানি চিকির্যাসক ডা. মারিকো ইনোই। রোগনির্ণয় শেষে নামমাত্র মূল্যে মিলবে ওষুধ।
গুরুতর অসুখ হলে প্রয়োজনে রোগীকে ভর্তি করে নেওয়া হয় হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে। আছে জরুরি বিভাগও। বহির্বিভাগ থেকে অন্তর্বিভাগ খুব বেশি দূরে নয়। অন্তর্বিভাগে ভর্তি হলে রোগীর জন্য দিতে হয় ২০০ টাকা এবং রোগীর সঙ্গীর জন্য ১০০ টাকা। রোগীর সম্পূর্ণ চিকির্যাসা ব্যয় কিংবা সঙ্গীসহ রোগীর খাওয়াদাওয়া ইত্যাদি ব্যাপারে এর বাইরে রোগীকে আর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হয় না।
অন্তর্বিভাগে কথা হয় পোড়া রোগী নার্গিস বেগমের সঙ্গে। রান্না করতে গিয়ে হাত ও পিঠ পুড়েছে তাঁর। বললেন, ‘এখানকার সেবা অনেক ভালো। সকাল-বিকেল ডাক্তার আসেন। সব সময় খোঁজখবর রাখেন তাঁরা।’
‘হাসপাতাল’ শব্দটি শুনলেই সচরাচর যে দৃশ্যটা চোখে ভাসে, তার সঙ্গে মিলবে না একদমই। কাব্যিক ভাষার আশ্রয় নিলে, ‘ছায়া সুনীবিড়’ কথাটির সঙ্গে বরং একদম মানানসই। প্রকৃতি, আধুনিকতা আর সেবার ব্রত মিলেমিশে একাকার এখানে। সত্যিকারের সেবার ব্রত আছে বলেই হাসপাতালের কর্মীবাহিনীকেও মনে হয় একান্ত কাছের কেউ। আর যিনি এই হাসপাতালের প্রধান কর্তাব্যক্তি, তাঁর সঙ্গে দূরত্বটা কেবলই ভৌগোলিক। তিনি এডরিক বেকার। জন্মসূত্রে নিউজিল্যান্ডের মানুষ এই বৃদ্ধ ডাক্তারের সদাহাস্যমুখ যেন সে দূরত্বটুকুও ঘুচিয়ে দেয়। চিরকুমার এই মানুষটি দেখতেই শুধু বিদেশি। আচরণে তিনি কেবল স্বদেশিই নন, স্বজনও! গ্রামবাসীর কাছে তাই ডাক্তার এডরিক বেকার হয়ে উঠেছেন একজন ‘ডাক্তার ভাই’।
অর্ধেক রোগ সারিয়ে দেবে যে দৃশ্যগুলো
১৩টি মাটির ঘর। দুটি ঘর টিনের। আরও আছে দুটো ঘর, হাসপাতালের প্রশাসক রতন যাকে বলেন ‘সেমি বিল্ডিং’—সাকল্যে এই হলো হাসপাতালের ঘরদোর। বিভিন্ন বিভাগে রোগীদের সেবা-শুশ্রূষায় যাঁরা নিয়োজিত, তাঁরা সবাই আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। ওষুধ কিংবা বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য নয়, পুরো হাসপাতাল এলাকাতেই নাকে এসে লাগবে মাটির ঘ্রাণ! হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে বিভিন্ন ধরনের সবজি আর ফুলের বাগান ছাড়াও আছে নানা প্রজাতির ফল আর ঔষধি গাছ। একটু দূরেই রয়েছে হাসপাতালের নিজস্ব গরুর খামার।
হাসপাতালে দুজন এমবিবিএস ডাক্তার ছাড়া প্যারামেডিকের সংখ্যা ২৫। এ ছাড়া প্রশিক্ষক ও গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রমের কর্মী মিলিয়ে প্রায় ৯০ জন কাজ করেন এখানে। ডাক্তার ভাই নিজে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলেছেন এই দক্ষ কর্মীবাহিনী।
গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রম ও ডায়াবেটিক সেবা
ব্রুনু মারাক, আপনি কত দূর পড়াশোনা করেছেন? প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে একগাল হেসে নেন এই আদিবাসী নারী। সেই হাসিতে দুই হাতে ধরে রাখা সাইকেলও নড়ে ওঠে। ছোট চোখ দুটো আরও ছোট হয়। বলেন, ‘দশম শ্রেণী পর্যন্ত।’
কথা বলে জানা গেল, তিনি যাচ্ছেন গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রমের কাজে পাশের গ্রামে। তাঁর বাড়ি পীরগাছা। প্রায় ১৫ বছর ধরে এই হাসপাতালে কাজ করছেন। কাজ করতে কেমন লাগে—জানতে চাইলে হাসতে হাসতেই বলেন, ‘অনেক ভালো। ডাক্তার ভাই যদি বিদেশ থেকে এসে এখানে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন, তাহলে আমরা কেন পারব না?’ হাসপাতালের প্রশাসক নূর আমিন জানান, আশপাশের প্রায় ১৭টি গ্রামে হাসপাতালের পক্ষ থেকে গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া চারটি ডায়াবেটিক সাবসেন্টার পরিচালিত হয়। ডায়াবেটিস-সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা মিলবে এখানে। কর্মীদের নিয়ে চলে স্বাস্থ্যসচেতনতা কার্যক্রমও।
যেভাবে এই হাসপাতাল
পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হওয়ার আগে কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প ছিল একটি হাসপাতালের সাবসেন্টার, যেখানে ডায়াবেটিসসহ অল্প কিছু রোগের চিকির্যাসাসেবা পাওয়া যেত। ১৯৯৬ সালে এই সাবসেন্টারকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেন এডরিক বেকার। টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার বনাঞ্চলের মধ্যে এমন হাসপাতাল আশার আলো হয়ে দেখা দেয় এখানকার আদিবাসী সমাজসহ সব গোত্রের মানুষের কাছে। একই সঙ্গে এডরিক বেকার প্রশিক্ষিত করতে থাকেন আশপাশের গ্রামের স্কুল পাস কর্মীদের, যাঁরা এরই মধ্যে পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছেন এবং কাজের উদ্দেশ্যে ঘুরছেন।
বর্তমানে এ হাসপাতালে দিনে প্রায় ১০০ জন রোগী আসে। তবে হাসপাতালের চিকির্যাসাসেবা শুধু আর্থিকভাবে অসচ্ছলদের জন্য।
হাসপাতাল চালানোর খরচের সিংহভাগ বছরে একবার নিজের দেশে গিয়ে আত্মীয়, বন্ধু আর শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন বেকার। খরচের পাঁচ শতাংশ আসে হাসপাতালের আয় থেকে। স্বল্প ব্যয়ে পরিপূর্ণ সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছেন এর কর্মীরা। তবে সবার প্রিয় ডাক্তার ভাই অপেক্ষায় আছেন এমন একজন মানুষের, যিনি এসে হাল ধরবেন হাসপাতালের—কি সেবায়, কি আর্থিক সহায়তায়!
হাসপাতালটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেন এই ওয়েব ঠিকানায়: www.kailakuri.com
‘কম ওষুধ, কম পরীক্ষা’
গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে সাইকেলে চড়ে প্রয়োজনে রোগীর বাড়ি পৌঁছে যান ডাক্তার ভাই। হাসিখুশি মানুষটিকে দেখে যতই সজীব-সতেজ মনে হোক, বয়স তাঁর ৭০ ছাড়িয়েছে। ডাক্তার ভাইয়ের শরীরেও বাসা বেঁধেছে রোগব্যাধি। নিজের গড়া হাসপাতালের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভেবে তিনি শঙ্কিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা খোঁজ করছি এমন একজন ডাক্তার, যিনি বুঝবেন এই কাজটা। সবচেয়ে ভালো হয়, ভবিষ্যতে এ হাসপাতালের পরিচালক যদি হন একজন বাংলাদেশি। এই প্রজেক্টটাকে বলা যায় একটা বিদ্রোহী প্রজেক্ট। এখানে আমরা গরিবদের জন্য কাজ করতে চাই। কম খরচের ব্যাপারটা বুঝতে হবে। অনেক ডাক্তার আছেন, যাঁরা বড় প্রেসক্রিপশন না লিখতে লজ্জা পান। ওষুধ কোম্পানির চাপ থেকে ডাক্তাররা ওষুধ দেন। এটা খুব লজ্জার, খুব দুঃখের ব্যাপার। এখানে যিনি আসবেন, তাঁকে বুঝতে হবে, ‘কম ওষুধ, কম পরীক্ষা’। একজন ডাক্তার যে পরিমাণ উপার্জন আশা করেন, এখানে এলে তিনি হয়তো তার ২০ ভাগের এক ভাগ পাবেন। তবু তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে, এখানে যদি আমরা মরেও যাই, অনাহারী হয়ে যাই, তবু আমরা জিতলাম!’
পাশের বাংলাদেশি সহকর্মীদের দেখিয়ে বেকার আরও যোগ করেন, ‘এ হাসপাতালে তাঁকে এঁদের নিয়ে কাজ করতে হবে। এই যে রতন ভাই, সুলতান—এঁদের কাজ শেখাতে হবে। এঁরাই হবেন তাঁর যন্ত্রপাতি। এঁরাই হবেন তাঁর স্টেথিস্কোপ, গ্লুকোমিটার, বিপি মেশিন!’
তারা তিনজন
রায়হান, রাসেল আর নাহিদ—এই তিন শিশুই কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত। তিনজনের বাড়ি ভিন্ন গ্রামে হলেও এই হাসপাতালে এসে তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে বন্ধুত্ব। সব সময়ই তিনজন আছে একসঙ্গে। দুই দিন আগে নাহিদকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তাই নিয়ে রায়হানের সেকি কান্না! হাসপাতালের কর্মীদের কাছে সে অনুযোগ করে বলে, ‘নাহিদকে পকেটে লুকিয়ে রাখব! যেতে দেব না।’ অগত্যা নাহিদও থেকে গেছে ওদের সঙ্গেই। ছবিটি যেদিন তোলা হয়, সেদিনই তিন বন্ধুর একসঙ্গে ছুটি পাওয়ার কথা।
রোগী যখন প্রশিক্ষক
মাসুদুর রহমান এসএসসি পাস। হুইলচেয়ার তাঁর সঙ্গী। ২০০৪ সালে এখানে এসে ভর্তি হন রোগী হিসেবে। বছর ঘুরতেই তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু বাদ সাধে পা দুটো। অবশেষে সঙ্গী হয় হুইলচেয়ার। কিন্তু দমিয়ে রাখা যায়নি মাসুদুর রহমানকে। প্রশিক্ষণ নিয়ে থেকে যান এখানেই। এখন সকাল-বিকেল পুষ্টি, ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন মাসুদুর রহমান।
আলাপচারিতার শুরুতেই ‘ডাক্তার ভাই’য়ের কড়া অনুরোধ, ‘আপনাদের লেখার মূলকথা যেন আমাকে নিয়ে না হয়।’ তবে কি শুধু আপনার হাসপাতাল নিয়ে লিখব? এমন প্রশ্নেও তাঁর আপত্তি। হাসিমুখে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালটা তো আমার না! এই হাসপাতালের পরিচালক হলো গরিব সমাজকর্মী ও সমর্থকরা। তবে হ্যাঁ, এদের দলনেতা আমি।’
১৯৭৬ সালে প্রথম মাত্র এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে আসেন নিউজিল্যান্ডের ডা. এডরিক বেকার। বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে তিনি খুঁজছিলেন এমন একটা জায়গা, যেখানে তিনি প্রকৃত অর্থে সুস্বাস্থ্যের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবেন। বেশ কিছু দেশ ঘুরে আবারও বাংলাদেশে ফিরলেন ১৯৭৯ সালে। সেই থেকে আছেন এ দেশেই। অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে কাজ করছেন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। এত বছরে শত সমস্যা-সংকট পেরোতে গিয়ে কখনো মনে হয়নি, ‘এখানে আর কাজ করা সম্ভব না, এবার নিজ দেশে ফিরব’? প্রশ্ন শুনে আবারও হাসেন এই সফেদ চুলের মানুষটি; বলেন, ‘আমি তো এমন একটা জায়গাই খুঁজছিলাম, যেখানে কাজ করতে গেলে বারবার বাধা আসবে। বাধাবিপত্তি তো আমার চলে যাওয়ার কারণ হতে পারে না!’
৩২ বছর, অনেকটা সময়। বাংলাদেশ যে কতটা আপন হয়ে গেছে, সে প্রমাণ মেলে তাঁর কথায়, ‘আমার মন-অন্তর এখানে আছে। নিজের দেশকেই এখন বিদেশ মনে হয়!’ গ্রামের সাদাসিধে মানুষগুলোও তাঁর খুব চেনা। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘এরা খুব আন্তরিক। অনেক সময় এমন হয়েছে, রোগী মারা গেছে, অথচ এরা বলে, “আপনারা এত চেষ্টা করলেন!” তারা খুব কৃতজ্ঞ।’
ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়
গাছের ফাঁক গলে সকালের রোদ যখন উঁকিঝুঁকি মারছে, টিনের ঘরটায় তখন বেশ কিছু মানুষ। ঘরের বাইরে কাঠের তক্তা দিয়ে বানানো বেশ কয়েকটা বেঞ্চ। তারই একটায় বসে অপেক্ষা করছিলেন শাহনাজ বেগম। পাশে যে ভ্যানটার ওপর বিছানা পাতা, তাতে চড়েই এখানে এসেছেন তিনি। ব্যথায় কাতর, কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। তবু খানিকটা যে স্বস্তি অনুভব করছেন, চোখেমুখে সে ভাব স্পষ্ট। যেন এখানে আসতে পেরেই অর্ধেক সুস্থ! সাতসকালেই শাহনাজের মতো কাঠের বেঞ্চ দখল করে অপেক্ষা করছিলেন আরও অনেকে। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প নামের হাসপাতালের প্রতিদিনকার কর্মদিবসের শুরুটা এমনই।
এখানে দিনের শুরু হয় পাখির ডাকে। চারপাশের গাছগাছালি থেকে নাম না-জানা অসংখ্য পাখি ঘুম ভাঙায় রোগীদের। বহির্বিভাগে নতুন রোগী এলে টিকিট কাটতে হয়। নতুন রোগীর জন্য টিকিটের মূল্য ২০ টাকা এবং পরবর্তীকালে ১০ টাকা। তবে রোগী যদি গ্রাম কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হন, সে ক্ষেত্রে টিকিটের মূল্য ৫ থেকে ১০ টাকা। কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগীকে পাঠানো হয় নির্দিষ্ট প্যারামেডিকের কাছে।
ছোটখাটো অসুখের ক্ষেত্রে প্যারামেডিকরাই বাতলে দেন রোগনিরাময়ের উপায়। জটিল কোনো রোগের ক্ষেত্রে আছেন এমবিবিএস ডাক্তার। বর্তমানে কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্পে ডা. বেকার ছাড়াও আছেন জাপানি চিকির্যাসক ডা. মারিকো ইনোই। রোগনির্ণয় শেষে নামমাত্র মূল্যে মিলবে ওষুধ।
গুরুতর অসুখ হলে প্রয়োজনে রোগীকে ভর্তি করে নেওয়া হয় হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে। আছে জরুরি বিভাগও। বহির্বিভাগ থেকে অন্তর্বিভাগ খুব বেশি দূরে নয়। অন্তর্বিভাগে ভর্তি হলে রোগীর জন্য দিতে হয় ২০০ টাকা এবং রোগীর সঙ্গীর জন্য ১০০ টাকা। রোগীর সম্পূর্ণ চিকির্যাসা ব্যয় কিংবা সঙ্গীসহ রোগীর খাওয়াদাওয়া ইত্যাদি ব্যাপারে এর বাইরে রোগীকে আর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হয় না।
অন্তর্বিভাগে কথা হয় পোড়া রোগী নার্গিস বেগমের সঙ্গে। রান্না করতে গিয়ে হাত ও পিঠ পুড়েছে তাঁর। বললেন, ‘এখানকার সেবা অনেক ভালো। সকাল-বিকেল ডাক্তার আসেন। সব সময় খোঁজখবর রাখেন তাঁরা।’
‘হাসপাতাল’ শব্দটি শুনলেই সচরাচর যে দৃশ্যটা চোখে ভাসে, তার সঙ্গে মিলবে না একদমই। কাব্যিক ভাষার আশ্রয় নিলে, ‘ছায়া সুনীবিড়’ কথাটির সঙ্গে বরং একদম মানানসই। প্রকৃতি, আধুনিকতা আর সেবার ব্রত মিলেমিশে একাকার এখানে। সত্যিকারের সেবার ব্রত আছে বলেই হাসপাতালের কর্মীবাহিনীকেও মনে হয় একান্ত কাছের কেউ। আর যিনি এই হাসপাতালের প্রধান কর্তাব্যক্তি, তাঁর সঙ্গে দূরত্বটা কেবলই ভৌগোলিক। তিনি এডরিক বেকার। জন্মসূত্রে নিউজিল্যান্ডের মানুষ এই বৃদ্ধ ডাক্তারের সদাহাস্যমুখ যেন সে দূরত্বটুকুও ঘুচিয়ে দেয়। চিরকুমার এই মানুষটি দেখতেই শুধু বিদেশি। আচরণে তিনি কেবল স্বদেশিই নন, স্বজনও! গ্রামবাসীর কাছে তাই ডাক্তার এডরিক বেকার হয়ে উঠেছেন একজন ‘ডাক্তার ভাই’।
অর্ধেক রোগ সারিয়ে দেবে যে দৃশ্যগুলো
১৩টি মাটির ঘর। দুটি ঘর টিনের। আরও আছে দুটো ঘর, হাসপাতালের প্রশাসক রতন যাকে বলেন ‘সেমি বিল্ডিং’—সাকল্যে এই হলো হাসপাতালের ঘরদোর। বিভিন্ন বিভাগে রোগীদের সেবা-শুশ্রূষায় যাঁরা নিয়োজিত, তাঁরা সবাই আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। ওষুধ কিংবা বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য নয়, পুরো হাসপাতাল এলাকাতেই নাকে এসে লাগবে মাটির ঘ্রাণ! হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে বিভিন্ন ধরনের সবজি আর ফুলের বাগান ছাড়াও আছে নানা প্রজাতির ফল আর ঔষধি গাছ। একটু দূরেই রয়েছে হাসপাতালের নিজস্ব গরুর খামার।
হাসপাতালে দুজন এমবিবিএস ডাক্তার ছাড়া প্যারামেডিকের সংখ্যা ২৫। এ ছাড়া প্রশিক্ষক ও গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রমের কর্মী মিলিয়ে প্রায় ৯০ জন কাজ করেন এখানে। ডাক্তার ভাই নিজে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলেছেন এই দক্ষ কর্মীবাহিনী।
গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রম ও ডায়াবেটিক সেবা
ব্রুনু মারাক, আপনি কত দূর পড়াশোনা করেছেন? প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে একগাল হেসে নেন এই আদিবাসী নারী। সেই হাসিতে দুই হাতে ধরে রাখা সাইকেলও নড়ে ওঠে। ছোট চোখ দুটো আরও ছোট হয়। বলেন, ‘দশম শ্রেণী পর্যন্ত।’
কথা বলে জানা গেল, তিনি যাচ্ছেন গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রমের কাজে পাশের গ্রামে। তাঁর বাড়ি পীরগাছা। প্রায় ১৫ বছর ধরে এই হাসপাতালে কাজ করছেন। কাজ করতে কেমন লাগে—জানতে চাইলে হাসতে হাসতেই বলেন, ‘অনেক ভালো। ডাক্তার ভাই যদি বিদেশ থেকে এসে এখানে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন, তাহলে আমরা কেন পারব না?’ হাসপাতালের প্রশাসক নূর আমিন জানান, আশপাশের প্রায় ১৭টি গ্রামে হাসপাতালের পক্ষ থেকে গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া চারটি ডায়াবেটিক সাবসেন্টার পরিচালিত হয়। ডায়াবেটিস-সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা মিলবে এখানে। কর্মীদের নিয়ে চলে স্বাস্থ্যসচেতনতা কার্যক্রমও।
যেভাবে এই হাসপাতাল
পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হওয়ার আগে কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প ছিল একটি হাসপাতালের সাবসেন্টার, যেখানে ডায়াবেটিসসহ অল্প কিছু রোগের চিকির্যাসাসেবা পাওয়া যেত। ১৯৯৬ সালে এই সাবসেন্টারকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেন এডরিক বেকার। টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার বনাঞ্চলের মধ্যে এমন হাসপাতাল আশার আলো হয়ে দেখা দেয় এখানকার আদিবাসী সমাজসহ সব গোত্রের মানুষের কাছে। একই সঙ্গে এডরিক বেকার প্রশিক্ষিত করতে থাকেন আশপাশের গ্রামের স্কুল পাস কর্মীদের, যাঁরা এরই মধ্যে পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছেন এবং কাজের উদ্দেশ্যে ঘুরছেন।
বর্তমানে এ হাসপাতালে দিনে প্রায় ১০০ জন রোগী আসে। তবে হাসপাতালের চিকির্যাসাসেবা শুধু আর্থিকভাবে অসচ্ছলদের জন্য।
হাসপাতাল চালানোর খরচের সিংহভাগ বছরে একবার নিজের দেশে গিয়ে আত্মীয়, বন্ধু আর শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন বেকার। খরচের পাঁচ শতাংশ আসে হাসপাতালের আয় থেকে। স্বল্প ব্যয়ে পরিপূর্ণ সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছেন এর কর্মীরা। তবে সবার প্রিয় ডাক্তার ভাই অপেক্ষায় আছেন এমন একজন মানুষের, যিনি এসে হাল ধরবেন হাসপাতালের—কি সেবায়, কি আর্থিক সহায়তায়!
হাসপাতালটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেন এই ওয়েব ঠিকানায়: www.kailakuri.com
‘কম ওষুধ, কম পরীক্ষা’
গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে সাইকেলে চড়ে প্রয়োজনে রোগীর বাড়ি পৌঁছে যান ডাক্তার ভাই। হাসিখুশি মানুষটিকে দেখে যতই সজীব-সতেজ মনে হোক, বয়স তাঁর ৭০ ছাড়িয়েছে। ডাক্তার ভাইয়ের শরীরেও বাসা বেঁধেছে রোগব্যাধি। নিজের গড়া হাসপাতালের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভেবে তিনি শঙ্কিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা খোঁজ করছি এমন একজন ডাক্তার, যিনি বুঝবেন এই কাজটা। সবচেয়ে ভালো হয়, ভবিষ্যতে এ হাসপাতালের পরিচালক যদি হন একজন বাংলাদেশি। এই প্রজেক্টটাকে বলা যায় একটা বিদ্রোহী প্রজেক্ট। এখানে আমরা গরিবদের জন্য কাজ করতে চাই। কম খরচের ব্যাপারটা বুঝতে হবে। অনেক ডাক্তার আছেন, যাঁরা বড় প্রেসক্রিপশন না লিখতে লজ্জা পান। ওষুধ কোম্পানির চাপ থেকে ডাক্তাররা ওষুধ দেন। এটা খুব লজ্জার, খুব দুঃখের ব্যাপার। এখানে যিনি আসবেন, তাঁকে বুঝতে হবে, ‘কম ওষুধ, কম পরীক্ষা’। একজন ডাক্তার যে পরিমাণ উপার্জন আশা করেন, এখানে এলে তিনি হয়তো তার ২০ ভাগের এক ভাগ পাবেন। তবু তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে, এখানে যদি আমরা মরেও যাই, অনাহারী হয়ে যাই, তবু আমরা জিতলাম!’
পাশের বাংলাদেশি সহকর্মীদের দেখিয়ে বেকার আরও যোগ করেন, ‘এ হাসপাতালে তাঁকে এঁদের নিয়ে কাজ করতে হবে। এই যে রতন ভাই, সুলতান—এঁদের কাজ শেখাতে হবে। এঁরাই হবেন তাঁর যন্ত্রপাতি। এঁরাই হবেন তাঁর স্টেথিস্কোপ, গ্লুকোমিটার, বিপি মেশিন!’
তারা তিনজন
রায়হান, রাসেল আর নাহিদ—এই তিন শিশুই কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত। তিনজনের বাড়ি ভিন্ন গ্রামে হলেও এই হাসপাতালে এসে তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে বন্ধুত্ব। সব সময়ই তিনজন আছে একসঙ্গে। দুই দিন আগে নাহিদকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তাই নিয়ে রায়হানের সেকি কান্না! হাসপাতালের কর্মীদের কাছে সে অনুযোগ করে বলে, ‘নাহিদকে পকেটে লুকিয়ে রাখব! যেতে দেব না।’ অগত্যা নাহিদও থেকে গেছে ওদের সঙ্গেই। ছবিটি যেদিন তোলা হয়, সেদিনই তিন বন্ধুর একসঙ্গে ছুটি পাওয়ার কথা।
রোগী যখন প্রশিক্ষক
মাসুদুর রহমান এসএসসি পাস। হুইলচেয়ার তাঁর সঙ্গী। ২০০৪ সালে এখানে এসে ভর্তি হন রোগী হিসেবে। বছর ঘুরতেই তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু বাদ সাধে পা দুটো। অবশেষে সঙ্গী হয় হুইলচেয়ার। কিন্তু দমিয়ে রাখা যায়নি মাসুদুর রহমানকে। প্রশিক্ষণ নিয়ে থেকে যান এখানেই। এখন সকাল-বিকেল পুষ্টি, ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন মাসুদুর রহমান।
Source: http://www.prothom-alo.com/detail/news/233127
- ২০১২.০৩.১৭ ০৩:৪৯
- this is the humanity. for mr Baker respect from heart. u r our respected brother. Allah help u.
-
zahid
২০১২.০৩.১৭ ০৪:১১ - What should I write, I am just surprised that such a man still lives in this world. ...... Simply unbelievable.
-
KHONDOKAR
২০১২.০৩.১৭ ০৪:১৪ - He is a selfless giver that is his greatness and we are selfish taker। (I won't say anything about our doctor's)
-
Dr Abu Siddique
২০১২.০৩.১৭ ০৭:০৫ - great man, you are Edric Baker! wish you good health and long live.
-
Ryahan
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৪০ - We always expecting someone will come and solve our POLITICAL (invite American or European), MEDICAL and other problems. Because we are busy with ourselves to fulfil our pockets.
-
monir
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৪৪ - GREAT, HOW BECOME A MAN LOOK LIKE GENIUS LIKE THIS FOREIGNER!!!
-
bibol
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৫৫ -
ডাক্তার ভাইয়ের হাসপাতাল
আমাদের দেশে যে সব ডাক্তার আছেন তাদের শিক্ষা নেওয় উচিত ডাক্তার ভাইয়ের কাছ থেকে
তারা ডাক্তার নামে যে ডাকাতের ভূমিকায় অভিনয় করিতেছে l
ডাক্তার কাকে বলে ডাক্তার ভাইকে দেখে শেখা উচিত একজন ভিনদেশি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচেছ
একে বলে ডাক্তার -
Dr Md. Golam Rabbani
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৫৯ - মনোবল অনেক শক্ত মনে হচছে। উদ্যেগ কে সাধুবাদ জানাই। তবে এই লোক টা চলে গেলে সমস্যা হতে পারে।
-
Shahiidur Rahman
২০১২.০৩.১৭ ০৮:৩৫ - অসাধারন একজন ভীনদেশী ডাক্তার বিলাশী জীবন ছেড়ে আমাদের এই গরীব দেশের মানুষের সেবা করছে আর আমাদের দেশের ডাক্তাররা আছেন কিভাবে নিজের বিবেক বিসর্যন দিয়ে গরিবের টাকা চুষেনেয়া যায়।
-
Rasel Kabir
২০১২.০৩.১৭ ০৯:৪০ - খুব ভাল লাগলো। ডাক্তার কেন এমন হয় না?
-
Abul Kalam
২০১২.০৩.১৭ ০৯:৪৩ -
@ Shahiidur Rahman,
চলেন ভাই, আমি এবং আপনি মিলে ঐ গ্রামে গিয়ে এই ভিনদেশী মহান ডাক্তারের কাজে সহায়তা করি, যাবেন নাকি? নাকি, পৃথিবীটা রক্ষার ভার অন্যের ছেড়ে দিয়ে আমরা শুধু নিজেরা আরাম-আয়েশ করে অন্যদেরকে রক্তচোষা বলে কম্পিটারে বীরত্ব ফলাব? -
Zahid
২০১২.০৩.১৭ ০৯:৫২ - Thank you Mr. Baker. You are a great example of humanity. Hope BD doctor's will refresh their mind following your example...
-
Azaharul islam
২০১২.০৩.১৭ ১০:০৩ - ইত্যাদি অনুষ্ঠানে ডাক্তার ভাইয়ের প্রতিবেদনটা দেখেছিলাম আর ভেবেছিলাম মানুষের সেবা করার ইচ্ছা থাকলে কত ভাবেই না করা যায়। আমাদের দেশের ডাক্তারদের জন্য ডাক্তার ভাই এক উত্তম দৃষ্টান্ত। স্কুলে ভাবসম্প্রসারণে পড়তাম তাই বলতে ইচ্ছা হয় মানুষের পরিচয় তার কর্মে, বংশ, আভিজাত্য বা টাকায় নয়। অজস্র সালাম ডাক্তার ভাই ও প্রথম আলো।
-
Thowhidul Islam
২০১২.০৩.১৭ ১০:০৭ - ভালবাসতে জান্তে হয় ...... সালাম হাজার হাজার.....।
-
ashraful
২০১২.০৩.১৭ ১১:০৪ - মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে আমার অসংখ্য ধন্যবাদ পৌঁছে দেবেন; তাঁর এই মন্তব্যে যদি অমানুষ ও রক্তচোষাদের একটুখানি হলেও টনক নড়ে।’
- ২০১২.০৩.১৭ ১১:১৬
- Bravo . Wish u good luck .
-
সাআখান
২০১২.০৩.১৭ ১১:২৭ - বাংলাদেশের জন্য বিদেশী ডাক্তারের ভালোবাসা। বাংলাদেশের সকল ডাক্তার না, মাত্র ১০ ভাগ ডাক্তারও যদি এই রকম চিন্তা করতে পারত !!! বদলে যেত বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের চেহারা। স্যালুট তোমাকে "ডাক্তার ভাই", একদিন ঠিক তোমার মত যেন হতে পারে অন্তত এদেশের মাত্র শতকরা ১০ ভাগ ডাক্তার।
-
Sultan Mahmud
২০১২.০৩.১৭ ১১:৫২ - আশাকরি বাংলাদেশের ডাক্তারগণ এ থেকে শিক্ষা নিবেন।
- ২০১২.০৩.১৭ ১১:৫৭
- After reading this news, I feel, I should explain my feelings. I am Saluting Mr. Baker and Mr. Mariko yeno. Thanks to our bd coworker who are supporting him from their deep of heart. The way of their working is called real love for work, great sacrifice for humanity. Entire Bangladesh has lot's of Dr. all of them are not commercial. Hope "Doctor vie" will get a great & responsible person as future survival.
-
Saidur Rahman
২০১২.০৩.১৭ ১১:৫৮ - We often express dissatisfaction over the performance of our doctors.
-
abdulla al noman
২০১২.০৩.১৭ ১২:২১ - আমরা সবাই ভুলে যাই যে দেশ ও দেশের মানুষের কাছে আমাদের কিছু দায় আছে যা আমাদের মনে করিয়ে দিলেন এক পরবাসী
-
M Jasem
২০১২.০৩.১৭ ১২:৩৭ - Government & Doctor Society of our country must take lesson from it but unfortunately we Bangalis always remain as usual.
-
Md. Amirul Islam
২০১২.০৩.১৭ ১২:৪৮ - মানুষের জন্যই মানুষ- এটাই তার প্রমান। আমাদের সকল ডাক্তারদের এখান থেকে কিছু শিক্ষা গ্রহন করা উচিত। শুধু টাকা নয়, সেবায় একজন ডাক্তারের মুল আদর্শ হওয়া উচিত।
-
Fahmida Yeasmin
২০১২.০৩.১৭ ১২:৫৭ - Salute Dr.Vai
-
Sabbir Ibne Sayeed
২০১২.০৩.১৭ ১৩:১৬ - Salute to him..................
-
K arim Howleder
২০১২.০৩.১৭ ১৩:৩৬ -
""""""Dr Md. Golam Rabbani-
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৫৯ মনোবল অনেক শক্ত মনে হচছে। উদ্যেগ কে সাধুবাদ জানাই। তবে এই লোক টা চলে গেলে সমস্যা হতে পারে। """"""""""""""""""""
. -
K arim Howleder
২০১২.০৩.১৭ ১৩:৪৩ - 2 days ago another comments was here someone from Australia that "Doctor was respected and so on........ etc. My questions what about all peoples? i think he came Australia as refuse thogh he as respect in society. He is person I think always callin "sIR" to any doctor back BD- I think that much quality he has and for this why he cannot assess himself in Australia society..........
-
Hasib Ahmed Khan
২০১২.০৩.১৭ ১৪:০০ - খুব ভােলা লাগল খবর টা পেড়
-
মোঃ আবু নাফি ইবনে জাহিদ
২০১২.০৩.১৭ ১৪:৫৫ - চমৎকার।
-
shaker
২০১২.০৩.১৭ ১৫:০১ - মানবতার এক মুক্তিদূত ডাক্তার ভাই । মানবসেবাই জীবনটাকে সপে দিয়াছেন । আর্তপীড়িতদের সেবায় পান পরমান্দ নচেত এতটা বছর ভিনদেশে ভিনদেশীদের সাথে থাকা দুষ্কর । জীবে প্রেম করেছে যেইজন সেই সেবিছে ঈশ্বর
-
sadat
২০১২.০৩.১৭ ১৫:৪৩ - ডাক্তারদের বাঁশ দেয়ার সুযোগ পেলে কেউ ছাড়ে না... @ shahidur rahman। মওকা যখন পেয়েছেন তখন আপনিও ডাক্তারদের পিণ্ডি চটকাবেন (মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এর মত).... এ আর নতুন কি? আসুন না আমরা সবাই ডাঃ বেকার হয়ে যাই। নিবেন নাকি একটা চ্যালেঞ্জ??? তাহলে আমার মত রক্তচোষাদের প্রকৃতই একটা শিক্ষা হতো!
-
juliet
২০১২.০৩.১৭ ১৮:০৯ - he is brilliant!!!!!i think he is perfect for nobel prize.
-
safayet hossen sifat
২০১২.০৩.১৭ ১৮:৩৪ - may allah give all of us this kind of mentality to do somoething like him...
No comments:
Post a Comment