Sunday, 25 March 2012

মোস্তফা আজিজ

মোস্তফা আজিজ (১৯২৩) - Jessore, Jhenaidah, Magura, Narail


'মোস্তফা আজিজ (১৯২৩)

Mujtafa Aziz
Jhinidah


পারিবারিক পরিচিতি :
শিল্পী মোস্তফা আজিজের জন্ম ১৯২৩ সালের ১ এপ্রিল ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা থানার সন্নিকটে মনোহরপুর গ্রামে। পিতা বরেণ্য কবি মরহুম গোলাম মোস্তফার দ্বিতীয় পুত্র শিল্পী আজিজ।
মোস্তফা আজিজের পরের ভাই দেশের একজন স্বনামধন্য পাপেট শিল্পী মোস্তফা  মনোয়ার।

শিক্ষাজীবন :
১৯৪৩ সালে কলকাতার বালীগঞ্জের টি. মিত্র হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করার পর তিনি কলকাতা বঙ্গবাসী কলেজে এক বছর পড়ার পরই কোলকাতা কলেজ অব আর্টস এন্ড ক্রাফট এ ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে ছয় বছরের পরিবর্তে দশ বছরে সেখান থেকে ‘কমার্শিয়াল আর্টস’ এ ডিপ্লোমা ডিগ্রী অর্জন করেন শিল্পী আজিজ।

কর্মজীবন :
ঢাকার নওয়াব গভর্ণমেন্ট হাই স্কুলে ড্রয়িং শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। এর পর ঢাকা আরমানিটোলা পাইলট স্কুল ও ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকতা করেন। তিনি তেজগাঁও জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউটেও কিছুদিন আর্টিস্ট কাম-ফটোগ্রাফার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর পর তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে চারু ও কারু শিল্পের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগপ্রপ্ত হন। পরে মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ এবং পরিশেষে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে অধ্যাপনার পর  ১লা এপ্রিল, ১৯৮০ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

শিল্পীজীবন :
ছেলেবেলায় শৈলকূপা প্রাইমারী স্কুলে ৪র্থ শেণীতে পড়ার সময়েই শিল্পী
মোস্তফা আজিজের ছবি আঁকার ‘হাতে খড়ি’। পরবর্তীতে কলকাতা বালীগঞ্জ গভর্ণমেন্ট হাই স্কুলে ৫ম শ্রেণী হতে ছবি আঁকার উদ্দীপনা বাড়তে থাকে তাঁর বড় ভাই ক্যাপ্টেন মোস্তফা আনোয়ার ও মায়ের অনুপ্রেরণায়। উক্ত বালীগঞ্জ সরকারী স্কুলের হেডমাস্টার পিতা কবি গোলাম মোস্তফা ও তাঁর আর্ট- শিক্ষক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উৎসাহে তাঁর শিল্পীজীবনে ক্রমবিকাশ ঘটতে থাকে।
পেন্সিল স্কেচের ক্লানি্তহীন শিল্পী
মোস্তফা আজিজ- নিজেকে তিনি “Jack of all trades, master of none!” বলেই দাবি করেন। তাস, পাশা, দাবা, ক্যারাম থেকে শুরু করে হকি, ক্রিকেট, ফুটবল, জুডো, কুস্তি, ঘুষোঘুষির কোনটাই তিনি বাদ দেননি। তাই তো শিল্পী মোস্তফা আজিজ উল্লেখিত সকল স্তরের খ্যাতনামা খেলোয়াড়দেরই ছবি এঁকেছেন শুধুমাত্র দু’টি পেন্সিলের মাধ্যমে। একটি কালো অপরটি ব্রাউন।

পল্টন ময়দানে বক্তৃতামঞ্চ থেকে দৃঢ়কণ্ঠে নির্যাতিত শোষিত মানুষের হয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানাচ্ছেন একজন জননেতা, কর্ম ব্যস্ততার মধ্যে একজন সাংবাদিকের চেতনা কিভাবে ফুটে উঠেছে, আপন ভূবনে সৃষ্টির নেশায় একজন কবি-সাহিত্যিক কিভাবে মগ্ন আছেন, সুরের মূর্ছনায় আপন মনে গাইছেন একজন বাউল, দুর্ভিক্ষ- প্রপীড়িত কোন একজন আদম সন্তান, বিভিন্ন মিলের কুলি- মজুর, কারখানার শ্রমিক, মাঠের কৃষিজীবী, মিউনিসিপ্যালিটির ডোম, মেথর এছাড়া পথে প্রান্তরের নির্যাতিত বুভুক্ষুদের স্কেচ বা অভিব্যক্তিও বাদ পড়েনি শিল্পী আজিজের পেন্সিল স্কেচে। তিনি ছবি আঁকেন শুধু মানুষের। তাও পুরো শরীরখানা নয়- শুধুমাত্র মুখের অভিব্যক্তি।

‘মানুষের মন মুহুর্তে বদলায়’, সেই বদলানো অভিব্যক্তিটি আজকালের একমাত্র ভিডিও ক্যামেরা দিয়েই দেখানো সম্ভবপর, কিন্তু সেই অভিব্যক্তিটি অঙ্কনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা সহজসাধ্য নয়।
এই দুঃসাধ্য কাজটি কেবলমাত্র পেন্সিলের স্বল্প আঁচড়ে এবং রবারের ঘসা-মাজা ব্যতিরেকে ক্ষণিকের মধ্যে ফুটিয়ে তোলেন শিল্পী
মোস্তফা আজিজ। বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যালামিটি বা দুর্যোগপূর্ণ ঘূর্ণিঝড়ে ও জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত এলাকার ছবি আঁকা এবং যে কোন দুর্ঘটনায় আহত নিহতের ছবিও এই শিল্পীই আঁকেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, উল্লেখিত যাবতীয় অভিব্যক্তিকে ভিত্তি করে শিল্পী মোস্তফা আজিজ প্রতিবেদনও লেখেন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়।

শিল্পী
মোস্তফা আজিজ দীর্ঘদিন ইলাষ্ট্রেশন ও কভার ডিজাইনের ওপর আঁকা শুরু করলেও ‘ফাইন-আর্ট’ অর্থাৎ ‘মানুষের প্রতিকৃতি’ আঁকার পরিপ্রেক্ষিতে মাওলানারা শিল্পীকে কাফের ফতোয়া দিলেন। গরীবের ছবি আঁকতে পুলিশ আজিজকে কমিউনিস্ট আখ্যা দিয়ে ধর-পাকড় শুরু করলো। আর সাধারণ লোক স্কেচের মর্ম না বুঝে নানান ঝামেলায় ফেলতে লাগল।
শিল্পী
মোস্তফা আজিজ এ যাবৎ শুধু আট হাজারেরও অধিক মানুষের প্রতিকৃতি এঁকেছেন। কুড়ি বারেরও অধিক শিল্পী মোস্তফা আজিজের একক চিত্র-প্রদর্শনী হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাতে। এই খ্যাতিমান শিল্পীর অতি মূল্যবান বেশ কিছু ‘পেন্সিল স্কেচ’ জাতীয় যাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য সরকার লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে ক্রয় করেছেন।
৭০ বৎসর বয়সেও শিল্পী পর্যটকের মত স্কেচখাতা, কন্টি ও সেলুলয়েড্ পেন্সিল ও স্কেচিং-টুলখানা নিয়ে পথ চলতে চলতে, মানুষের চেহারা দেখ্‌তে দেখ্‌তে হেঁটে যেতেন। কেউ জোর জবরদস্তি করে চাপ সৃষ্টি করলেও তিনি ছবি আঁকতেন না। কিন্তু তাঁর মনের মত মানুষ পেলে সেই মুহুর্তেই ছবি আঁকতে শুরু করতেন।

বৈবাহিকজীবন :
১৯৬১ সালে শিল্পী
মোস্তফা আজিজ সাফায়েতুন-নবীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

পরলোকগমন :
এই বরেণ্য চিত্রশিল্পী ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসের ৩ তারিখ বুধবার পরলোকগমন করেন।


তথ্য সূত্র :
যশোরের যশস্বী, শিল্পী ও সাহিত্যিক
লেখক : কাজী শওকত শাহী

সম্পাদনা :
মোঃ হাসানূজ্জামান বিপুল


সবশেষ আপডেট : মার্চ ২০১২'




মোস্তফা আজিজ (১৯২৩) - Jessore, Jhenaidah, Magura, Narail

সৌজন্যে: www.jessore.info

একজন আপনি

                                - শফিকুল ইসলাম বাহার
একজন আপনি- আমার ‘রবার্ট কাকা’।
এই আপনিই তো আবার অনেকের ‘তুমি’ ছিলেন।
আপনি ছিলেন আমার ডাক্তার কাকভ করিম কাকার বন্ধু। যেন সিন্ধুর চেয়েও বড় ছিল আপনার মন। তাইতো আমার মত অনেকেরই আপনি প্রিয়-বন্ধু হয়ে ছিলেন। আপনি ছিলেন আমার মত অনেকেরই অসম-বয়সের সমমনা বন্ধু।
আজ এক ঝট্কায় কত কথাই না মনে পড়ছে। মনে পড়ছে, আপনার মধুর সঙ্গ পাওয়ার লোভে ঢাকা থেকে শৈলকুপা যাবার জন্যে মনটা কেমন আকুল হত! হাজী-রাস্তার মোড়ে আজাদ ভাইয়ের ওষুধের দোকান - সেখানে বসে আমাদের কত বিকেল আপনি মাতিয়ে দিতেন, কত বিকেল ছুঁয়ে যেত সন্ধ্যেকে!
সর্ম্পকের মাত্রাকে ভুলে গিয়ে ছেলেমানুষির মতই উত্তাল হতেন আপনি। সেই ছোটবেলায় একবার মঞ্চে আপনার অভিনয় দেখেছিলাম- আজো তার ভালোলাগা কী গভীর লেগে আছে আমার মত অনেকেরই মনে আর কানে!
রবার্ট কাকা, আপনাকে জড়িয়ে আজ আমার ক’জন প্রিয়-মানুষের মুখ মনের উঠোনে বার বার হেসে উঠছে! পলাশ, জুয়েল, রফিক, দিরাজ- আপনার কাছে ওরাও ছিলো আপনার-শৈলকুপার মতই খুব প্রিয়! কতবার শাহী মসজিদে ঈদের নামাজ শেষ করে আমি, পলাশ আর জুয়েল ঈদের সকালের প্রথম-খাওয়াটা আপনার বাড়িতেই খেয়েছি! কী করে ভুলি –আপনার সেই আন্তরিক আপ্যায়নের মধুময় স্মৃতি? ভোলা যায় না, তাই ভুলতে পারি নি! আজ ভাবছি আর কষ্ট পাচ্ছি! একবার আপনার বাড়িতে আমি আর দিরাজ গিয়েছিলাম আপনাকে দেখতে, সঙ্গে ছিল আপনার জন্যে কিছু উপহার। দিরাজের কাছে আপনি সেই উপহারের কথা ব’লে খুব নাকি কেঁদেছিলেন! বলেছিলেন, “জানো তোমাদের ক’জনের জন্যে খুব বাঁচতে ইচেছ করে।“বুকে কষ্টের বোবা-কান্না আর চোখে আবেগের জল নিয়ে আপনার-বাহার আজ বলছে, “রবার্ট কাকা, আপনি তো বেঁচেই আছেন। আপনার-বাহার,পলাশ,জুয়েল,রফিক,দিরাজ- ওরা কখনো আপনাকে ভুলবে না।আপনি আছেন আমাদের ভালোলাগায়, আপনি থাকবেন আমাদের ভালোবাসায়। আপনি আছেন এ মনের মুগ্ধতায়, আপনি থাকবেন আপনাকে না-পাওয়ার আকুলতায়!
রবার্ট কাকা, অনেকেই হয়তো জানে না, আজকে জানাই। আমি,পলাশ, দিরাজ,জুয়েল আপনার মনোকষ্ট ,আপনার অর্থকষ্ট নিয়ে খুব ভাবতাম। একবার আমি আর পলাশ আপনার ঢাকায়-থাকা ছেলের খোঁজে ব্যস্ত হলাম। মনে আছে, একরাতে ঢাকা বেতারের গেটের সামনে বসে আপনার ছেলেকে খুব বুঝিয়েছিলাম, ছেলে বাবাকে দেখবে-এটাই তো স্বাভাবিক।
তারপর কত না সময় পেরিয়ে গেছে! আপনি তখন বেশ অসুস্থ। আমি আর দিরাজ গেছি আপনাকে দেখতে। আপনার সদ্যÑপ্রকাশিত কবিতার বইটা এগিয়ে দিয়ে বললেন,“বাহার, আমার প্রথম কবিতাটা তুমি একটু পড়ে শোনাও। তোমার আবৃত্তি আমার খুব ভালো লাগে।“আমি কোনোরকম আপত্তি ছাড়াই পড়ে শুনিয়েছিলাম।এমনই অনেক স্মৃতি আজ মনের ভিতর উথাল-পাথাল করে ঢেউ তুলছে।
আজ আপনি নেই ,কিন্তু কী ভীষণ আছেন আপনি! আজ এই যে আমার এতো বলা ,সব তো আপনার জন্যে, যারা আপনার সান্নিধ্য-ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত ছিলো তাদের জন্যে।
এই তো হয়, হয়তো এটাই স্বাভাবিক, দূরে গেলে কাছের মানুষটিকে খুব বেশি ক’রে মনে  পড়ে। কবিতা লেখা আর ছবি আঁকা- দুই বাতিকই ছিল আপনার।
আপনার সবসময়ের বাইরের পোশাক ইস্ত্রি-করা সাদা-পাজামা আর পাঞ্জাবি আমাদের নজর কাড়তো। দেখা হলেই মুচ্কি হাসি আর  কুশল বিনিময়- আজ সবই আমাদের সঞ্চয়ী-হিসাবে জমা হয়ে আছে!
 আপনি আর ফিরে আসবেন না ব’লে সেই যে চলে গেলেন, তার ক’দিন পর আপনারই এক øেহধন্য তপন বাগচীর ফোন আমার ভেতর-মনটা কাঁপিয়ে দিলো, “বাহার ভাই, রবার্ট কাকার জন্য একটা লেখা দেবেন। ঠিক তারপরই এলো আপনার-জুয়েলের ফোন, “বাহার ভাই, রবার্ট কাকাকে নিয়ে একটা স্মরণিকা বের হবে, আপনি কিন্তু অবশ্যই একটা লেখা দেবেন।”
লেখা তো দিলাম, যে-লেখার সাক্ষী হিসেবে আপনাকে পেলাম না, যে-লেখার সাক্ষী হয়ে রইলাম আপনি বাদে আমরা সবাই।এ-লেখা আপনাকে সামনে বসিয়ে, আপনাকে খুব শোনাতে ইচ্ছে করছে।
রবার্ট কাকা, মনের মানুষ নাকি মনের সব কথা শুনতে পায়, তাহলে নিশ্চয়ই আপনিও শুনতে পাচ্ছেন আপনার-বাহারের কথা।।


Jewel Hasan advised that Robert kaka passed away on 2012 Feb 07.

ঢাকা,  Received 2012 Apr 22 via Tapashi Munir's email. Thanks Jewel Hasan for making this email readable on 2012 May 23.




Saturday, 17 March 2012

ডাক্তার ভাইয়ের হাসপাতালে


মূল রচনা

ডাক্তার ভাইয়ের হাসপাতালে

রুবেল হাবিব ও মো. সাইফুল্লাহ | তারিখ: ১৭-০৩-২০১২
  • হাসিমুখ সাদামনের মানুষ: এলাকার সবার কাছে ‘ডাক্তার ভাই’ নামে পরিচিত এডরিক বেকার হাসিমুখ সাদামনের মানুষ: এলাকার সবার কাছে ‘ডাক্তার ভাই’ নামে পরিচিত এডরিক বেকার
  • ‘হাসপাতাল’ শব্দটি শুনলে যে দৃশ্য চোখে ভাসে, তার সঙ্গে এই হাসপাতালকে মেলানো যাবে না একদমই ‘হাসপাতাল’ শব্দটি শুনলে যে দৃশ্য চোখে ভাসে, তার সঙ্গে এই হাসপাতালকে মেলানো যাবে না একদমই
  • মাসুদুর রহমান মাসুদুর রহমান
  • হাসপাতালের বাইরে চিকিত্সার অপেক্ষায় হাসপাতালের বাইরে চিকিত্সার অপেক্ষায়
    ছবি: মো. সাইফুল্লাহ
1 2 3 4 5
একজন ভিনদেশি শুভ্রকেশ চিকির‌্যাসক, যাঁর মনটাও একই রকম সফেদ! আর কিছু মানুষ, যাঁদের মন তাঁদের ঘরগুলোর মতোই মাটিতে গড়া! সবাই মিলে পরিচালনা করছেন কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার এই ব্যতিক্রমী হাসপাতাল ঘুরে লিখেছেন রুবেল হাবিব ও মো. সাইফুল্লাহ

আলাপচারিতার শুরুতেই ‘ডাক্তার ভাই’য়ের কড়া অনুরোধ, ‘আপনাদের লেখার মূলকথা যেন আমাকে নিয়ে না হয়।’ তবে কি শুধু আপনার হাসপাতাল নিয়ে লিখব? এমন প্রশ্নেও তাঁর আপত্তি। হাসিমুখে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালটা তো আমার না! এই হাসপাতালের পরিচালক হলো গরিব সমাজকর্মী ও সমর্থকরা। তবে হ্যাঁ, এদের দলনেতা আমি।’
১৯৭৬ সালে প্রথম মাত্র এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে আসেন নিউজিল্যান্ডের ডা. এডরিক বেকার। বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে তিনি খুঁজছিলেন এমন একটা জায়গা, যেখানে তিনি প্রকৃত অর্থে সুস্বাস্থ্যের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবেন। বেশ কিছু দেশ ঘুরে আবারও বাংলাদেশে ফিরলেন ১৯৭৯ সালে। সেই থেকে আছেন এ দেশেই। অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে কাজ করছেন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। এত বছরে শত সমস্যা-সংকট পেরোতে গিয়ে কখনো মনে হয়নি, ‘এখানে আর কাজ করা সম্ভব না, এবার নিজ দেশে ফিরব’? প্রশ্ন শুনে আবারও হাসেন এই সফেদ চুলের মানুষটি; বলেন, ‘আমি তো এমন একটা জায়গাই খুঁজছিলাম, যেখানে কাজ করতে গেলে বারবার বাধা আসবে। বাধাবিপত্তি তো আমার চলে যাওয়ার কারণ হতে পারে না!’
৩২ বছর, অনেকটা সময়। বাংলাদেশ যে কতটা আপন হয়ে গেছে, সে প্রমাণ মেলে তাঁর কথায়, ‘আমার মন-অন্তর এখানে আছে। নিজের দেশকেই এখন বিদেশ মনে হয়!’ গ্রামের সাদাসিধে মানুষগুলোও তাঁর খুব চেনা। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘এরা খুব আন্তরিক। অনেক সময় এমন হয়েছে, রোগী মারা গেছে, অথচ এরা বলে, “আপনারা এত চেষ্টা করলেন!” তারা খুব কৃতজ্ঞ।’

ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়
গাছের ফাঁক গলে সকালের রোদ যখন উঁকিঝুঁকি মারছে, টিনের ঘরটায় তখন বেশ কিছু মানুষ। ঘরের বাইরে কাঠের তক্তা দিয়ে বানানো বেশ কয়েকটা বেঞ্চ। তারই একটায় বসে অপেক্ষা করছিলেন শাহনাজ বেগম। পাশে যে ভ্যানটার ওপর বিছানা পাতা, তাতে চড়েই এখানে এসেছেন তিনি। ব্যথায় কাতর, কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। তবু খানিকটা যে স্বস্তি অনুভব করছেন, চোখেমুখে সে ভাব স্পষ্ট। যেন এখানে আসতে পেরেই অর্ধেক সুস্থ! সাতসকালেই শাহনাজের মতো কাঠের বেঞ্চ দখল করে অপেক্ষা করছিলেন আরও অনেকে। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প নামের হাসপাতালের প্রতিদিনকার কর্মদিবসের শুরুটা এমনই।
এখানে দিনের শুরু হয় পাখির ডাকে। চারপাশের গাছগাছালি থেকে নাম না-জানা অসংখ্য পাখি ঘুম ভাঙায় রোগীদের। বহির্বিভাগে নতুন রোগী এলে টিকিট কাটতে হয়। নতুন রোগীর জন্য টিকিটের মূল্য ২০ টাকা এবং পরবর্তীকালে ১০ টাকা। তবে রোগী যদি গ্রাম কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হন, সে ক্ষেত্রে টিকিটের মূল্য ৫ থেকে ১০ টাকা। কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগীকে পাঠানো হয় নির্দিষ্ট প্যারামেডিকের কাছে।
ছোটখাটো অসুখের ক্ষেত্রে প্যারামেডিকরাই বাতলে দেন রোগনিরাময়ের উপায়। জটিল কোনো রোগের ক্ষেত্রে আছেন এমবিবিএস ডাক্তার। বর্তমানে কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্পে ডা. বেকার ছাড়াও আছেন জাপানি চিকির‌্যাসক ডা. মারিকো ইনোই। রোগনির্ণয় শেষে নামমাত্র মূল্যে মিলবে ওষুধ।
গুরুতর অসুখ হলে প্রয়োজনে রোগীকে ভর্তি করে নেওয়া হয় হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে। আছে জরুরি বিভাগও। বহির্বিভাগ থেকে অন্তর্বিভাগ খুব বেশি দূরে নয়। অন্তর্বিভাগে ভর্তি হলে রোগীর জন্য দিতে হয় ২০০ টাকা এবং রোগীর সঙ্গীর জন্য ১০০ টাকা। রোগীর সম্পূর্ণ চিকির‌্যাসা ব্যয় কিংবা সঙ্গীসহ রোগীর খাওয়াদাওয়া ইত্যাদি ব্যাপারে এর বাইরে রোগীকে আর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হয় না।
অন্তর্বিভাগে কথা হয় পোড়া রোগী নার্গিস বেগমের সঙ্গে। রান্না করতে গিয়ে হাত ও পিঠ পুড়েছে তাঁর। বললেন, ‘এখানকার সেবা অনেক ভালো। সকাল-বিকেল ডাক্তার আসেন। সব সময় খোঁজখবর রাখেন তাঁরা।’
‘হাসপাতাল’ শব্দটি শুনলেই সচরাচর যে দৃশ্যটা চোখে ভাসে, তার সঙ্গে মিলবে না একদমই। কাব্যিক ভাষার আশ্রয় নিলে, ‘ছায়া সুনীবিড়’ কথাটির সঙ্গে বরং একদম মানানসই। প্রকৃতি, আধুনিকতা আর সেবার ব্রত মিলেমিশে একাকার এখানে। সত্যিকারের সেবার ব্রত আছে বলেই হাসপাতালের কর্মীবাহিনীকেও মনে হয় একান্ত কাছের কেউ। আর যিনি এই হাসপাতালের প্রধান কর্তাব্যক্তি, তাঁর সঙ্গে দূরত্বটা কেবলই ভৌগোলিক। তিনি এডরিক বেকার। জন্মসূত্রে নিউজিল্যান্ডের মানুষ এই বৃদ্ধ ডাক্তারের সদাহাস্যমুখ যেন সে দূরত্বটুকুও ঘুচিয়ে দেয়। চিরকুমার এই মানুষটি দেখতেই শুধু বিদেশি। আচরণে তিনি কেবল স্বদেশিই নন, স্বজনও! গ্রামবাসীর কাছে তাই ডাক্তার এডরিক বেকার হয়ে উঠেছেন একজন ‘ডাক্তার ভাই’।

অর্ধেক রোগ সারিয়ে দেবে যে দৃশ্যগুলো
১৩টি মাটির ঘর। দুটি ঘর টিনের। আরও আছে দুটো ঘর, হাসপাতালের প্রশাসক রতন যাকে বলেন ‘সেমি বিল্ডিং’—সাকল্যে এই হলো হাসপাতালের ঘরদোর। বিভিন্ন বিভাগে রোগীদের সেবা-শুশ্রূষায় যাঁরা নিয়োজিত, তাঁরা সবাই আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। ওষুধ কিংবা বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য নয়, পুরো হাসপাতাল এলাকাতেই নাকে এসে লাগবে মাটির ঘ্রাণ! হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে বিভিন্ন ধরনের সবজি আর ফুলের বাগান ছাড়াও আছে নানা প্রজাতির ফল আর ঔষধি গাছ। একটু দূরেই রয়েছে হাসপাতালের নিজস্ব গরুর খামার।
হাসপাতালে দুজন এমবিবিএস ডাক্তার ছাড়া প্যারামেডিকের সংখ্যা ২৫। এ ছাড়া প্রশিক্ষক ও গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রমের কর্মী মিলিয়ে প্রায় ৯০ জন কাজ করেন এখানে। ডাক্তার ভাই নিজে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলেছেন এই দক্ষ কর্মীবাহিনী।

গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রম ও ডায়াবেটিক সেবা
ব্রুনু মারাক, আপনি কত দূর পড়াশোনা করেছেন? প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে একগাল হেসে নেন এই আদিবাসী নারী। সেই হাসিতে দুই হাতে ধরে রাখা সাইকেলও নড়ে ওঠে। ছোট চোখ দুটো আরও ছোট হয়। বলেন, ‘দশম শ্রেণী পর্যন্ত।’
কথা বলে জানা গেল, তিনি যাচ্ছেন গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রমের কাজে পাশের গ্রামে। তাঁর বাড়ি পীরগাছা। প্রায় ১৫ বছর ধরে এই হাসপাতালে কাজ করছেন। কাজ করতে কেমন লাগে—জানতে চাইলে হাসতে হাসতেই বলেন, ‘অনেক ভালো। ডাক্তার ভাই যদি বিদেশ থেকে এসে এখানে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন, তাহলে আমরা কেন পারব না?’ হাসপাতালের প্রশাসক নূর আমিন জানান, আশপাশের প্রায় ১৭টি গ্রামে হাসপাতালের পক্ষ থেকে গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য গ্রাম স্বাস্থ্য কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া চারটি ডায়াবেটিক সাবসেন্টার পরিচালিত হয়। ডায়াবেটিস-সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা মিলবে এখানে। কর্মীদের নিয়ে চলে স্বাস্থ্যসচেতনতা কার্যক্রমও।

যেভাবে এই হাসপাতাল
পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হওয়ার আগে কাইলাকুরি স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প ছিল একটি হাসপাতালের সাবসেন্টার, যেখানে ডায়াবেটিসসহ অল্প কিছু রোগের চিকির‌্যাসাসেবা পাওয়া যেত। ১৯৯৬ সালে এই সাবসেন্টারকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেন এডরিক বেকার। টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার বনাঞ্চলের মধ্যে এমন হাসপাতাল আশার আলো হয়ে দেখা দেয় এখানকার আদিবাসী সমাজসহ সব গোত্রের মানুষের কাছে। একই সঙ্গে এডরিক বেকার প্রশিক্ষিত করতে থাকেন আশপাশের গ্রামের স্কুল পাস কর্মীদের, যাঁরা এরই মধ্যে পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছেন এবং কাজের উদ্দেশ্যে ঘুরছেন।
বর্তমানে এ হাসপাতালে দিনে প্রায় ১০০ জন রোগী আসে। তবে হাসপাতালের চিকির‌্যাসাসেবা শুধু আর্থিকভাবে অসচ্ছলদের জন্য।
হাসপাতাল চালানোর খরচের সিংহভাগ বছরে একবার নিজের দেশে গিয়ে আত্মীয়, বন্ধু আর শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন বেকার। খরচের পাঁচ শতাংশ আসে হাসপাতালের আয় থেকে। স্বল্প ব্যয়ে পরিপূর্ণ সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছেন এর কর্মীরা। তবে সবার প্রিয় ডাক্তার ভাই অপেক্ষায় আছেন এমন একজন মানুষের, যিনি এসে হাল ধরবেন হাসপাতালের—কি সেবায়, কি আর্থিক সহায়তায়!
হাসপাতালটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেন এই ওয়েব ঠিকানায়: www.kailakuri.com

‘কম ওষুধ, কম পরীক্ষা’
গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে সাইকেলে চড়ে প্রয়োজনে রোগীর বাড়ি পৌঁছে যান ডাক্তার ভাই। হাসিখুশি মানুষটিকে দেখে যতই সজীব-সতেজ মনে হোক, বয়স তাঁর ৭০ ছাড়িয়েছে। ডাক্তার ভাইয়ের শরীরেও বাসা বেঁধেছে রোগব্যাধি। নিজের গড়া হাসপাতালের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভেবে তিনি শঙ্কিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা খোঁজ করছি এমন একজন ডাক্তার, যিনি বুঝবেন এই কাজটা। সবচেয়ে ভালো হয়, ভবিষ্যতে এ হাসপাতালের পরিচালক যদি হন একজন বাংলাদেশি। এই প্রজেক্টটাকে বলা যায় একটা বিদ্রোহী প্রজেক্ট। এখানে আমরা গরিবদের জন্য কাজ করতে চাই। কম খরচের ব্যাপারটা বুঝতে হবে। অনেক ডাক্তার আছেন, যাঁরা বড় প্রেসক্রিপশন না লিখতে লজ্জা পান। ওষুধ কোম্পানির চাপ থেকে ডাক্তাররা ওষুধ দেন। এটা খুব লজ্জার, খুব দুঃখের ব্যাপার। এখানে যিনি আসবেন, তাঁকে বুঝতে হবে, ‘কম ওষুধ, কম পরীক্ষা’। একজন ডাক্তার যে পরিমাণ উপার্জন আশা করেন, এখানে এলে তিনি হয়তো তার ২০ ভাগের এক ভাগ পাবেন। তবু তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে, এখানে যদি আমরা মরেও যাই, অনাহারী হয়ে যাই, তবু আমরা জিতলাম!’
পাশের বাংলাদেশি সহকর্মীদের দেখিয়ে বেকার আরও যোগ করেন, ‘এ হাসপাতালে তাঁকে এঁদের নিয়ে কাজ করতে হবে। এই যে রতন ভাই, সুলতান—এঁদের কাজ শেখাতে হবে। এঁরাই হবেন তাঁর যন্ত্রপাতি। এঁরাই হবেন তাঁর স্টেথিস্কোপ, গ্লুকোমিটার, বিপি মেশিন!’

তারা তিনজন
রায়হান, রাসেল আর নাহিদ—এই তিন শিশুই কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত। তিনজনের বাড়ি ভিন্ন গ্রামে হলেও এই হাসপাতালে এসে তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে বন্ধুত্ব। সব সময়ই তিনজন আছে একসঙ্গে। দুই দিন আগে নাহিদকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তাই নিয়ে রায়হানের সেকি কান্না! হাসপাতালের কর্মীদের কাছে সে অনুযোগ করে বলে, ‘নাহিদকে পকেটে লুকিয়ে রাখব! যেতে দেব না।’ অগত্যা নাহিদও থেকে গেছে ওদের সঙ্গেই। ছবিটি যেদিন তোলা হয়, সেদিনই তিন বন্ধুর একসঙ্গে ছুটি পাওয়ার কথা।

রোগী যখন প্রশিক্ষক
মাসুদুর রহমান এসএসসি পাস। হুইলচেয়ার তাঁর সঙ্গী। ২০০৪ সালে এখানে এসে ভর্তি হন রোগী হিসেবে। বছর ঘুরতেই তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু বাদ সাধে পা দুটো। অবশেষে সঙ্গী হয় হুইলচেয়ার। কিন্তু দমিয়ে রাখা যায়নি মাসুদুর রহমানকে। প্রশিক্ষণ নিয়ে থেকে যান এখানেই। এখন সকাল-বিকেল পুষ্টি, ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন মাসুদুর রহমান।

Source: http://www.prothom-alo.com/detail/news/233127

২০১২.০৩.১৭ ০৩:৪৯
this is the humanity. for mr Baker respect from heart. u r our respected brother. Allah help u.

zahid
zahid
২০১২.০৩.১৭ ০৪:১১
What should I write, I am just surprised that such a man still lives in this world. ...... Simply unbelievable.

KHONDOKAR
KHONDOKAR
২০১২.০৩.১৭ ০৪:১৪
He is a selfless giver that is his greatness and we are selfish taker। (I won't say anything about our doctor's)

Dr Abu Siddique
Dr Abu Siddique
২০১২.০৩.১৭ ০৭:০৫
great man, you are Edric Baker! wish you good health and long live.

Ryahan
Ryahan
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৪০
We always expecting someone will come and solve our POLITICAL (invite American or European), MEDICAL and other problems. Because we are busy with ourselves to fulfil our pockets.

monir
monir
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৪৪
GREAT, HOW BECOME A MAN LOOK LIKE GENIUS LIKE THIS FOREIGNER!!!

bibol
bibol
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৫৫
ডাক্তার ভাইয়ের হাসপাতাল
আমাদের দেশে যে সব ডাক্তার আছেন তাদের শিক্ষা নেওয় উচিত ডাক্তার ভাইয়ের কাছ থেকে
তারা ডাক্তার নামে যে ডাকাতের ভূমিকায় অভিনয় করিতেছে l
ডাক্তার কাকে বলে ডাক্তার ভাইকে দেখে শেখা উচিত একজন ভিনদেশি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচে৊ছ
একে বলে ডাক্তার

Dr Md. Golam Rabbani
Dr Md. Golam Rabbani
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৫৯
মনোবল অনেক শক্ত মনে হচছে। উদ্যেগ কে সাধুবাদ জানাই। তবে এই লোক টা চলে গেলে সমস্যা হতে পারে।

Shahiidur Rahman
Shahiidur Rahman
২০১২.০৩.১৭ ০৮:৩৫
অসাধারন একজন ভীনদেশী ডাক্তার বিলাশী জীবন ছেড়ে আমাদের এই গরীব দেশের মানুষের সেবা করছে আর আমাদের দেশের ডাক্তাররা আছেন কিভাবে নিজের বিবেক বিসর্যন দিয়ে গরিবের টাকা চুষেনেয়া যায়।

Rasel Kabir
Rasel Kabir
২০১২.০৩.১৭ ০৯:৪০
খুব ভাল লাগলো। ডাক্তার কেন এমন হয় না?

Abul Kalam
Abul Kalam
২০১২.০৩.১৭ ০৯:৪৩
@ Shahiidur Rahman,
চলেন ভাই, আমি এবং আপনি মিলে ঐ গ্রামে গিয়ে এই ভিনদেশী মহান ডাক্তারের কাজে সহায়তা করি, যাবেন নাকি? নাকি, পৃথিবীটা রক্ষার ভার অন্যের ছেড়ে দিয়ে আমরা শুধু নিজেরা আরাম-আয়েশ করে অন্যদেরকে রক্তচোষা বলে কম্পিটারে বীরত্ব ফলাব?

Zahid
Zahid
২০১২.০৩.১৭ ০৯:৫২
Thank you Mr. Baker. You are a great example of humanity. Hope BD doctor's will refresh their mind following your example...

Azaharul islam
Azaharul islam
২০১২.০৩.১৭ ১০:০৩
ইত্যাদি অনুষ্ঠানে ডাক্তার ভাইয়ের প্রতিবেদনটা দেখেছিলাম আর ভেবেছিলাম মানুষের সেবা করার ইচ্ছা থাকলে কত ভাবেই না করা যায়। আমাদের দেশের ডাক্তারদের জন্য ডাক্তার ভাই এক উত্তম দৃষ্টান্ত। স্কুলে ভাবসম্প্রসারণে পড়তাম তাই বলতে ইচ্ছা হয় মানুষের পরিচয় তার কর্মে, বংশ, আভিজাত্য বা টাকায় নয়। অজস্র সালাম ডাক্তার ভাই ও প্রথম আলো।

Thowhidul Islam
Thowhidul Islam
২০১২.০৩.১৭ ১০:০৭
ভালবাসতে জান্তে হয় ...... সালাম হাজার হাজার.....।

ashraful
ashraful
২০১২.০৩.১৭ ১১:০৪
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে আমার অসংখ্য ধন্যবাদ পৌঁছে দেবেন; তাঁর এই মন্তব্যে যদি অমানুষ ও রক্তচোষাদের একটুখানি হলেও টনক নড়ে।’

২০১২.০৩.১৭ ১১:১৬
Bravo . Wish u good luck .

সাআখান
সাআখান
২০১২.০৩.১৭ ১১:২৭
বাংলাদেশের জন্য বিদেশী ডাক্তারের ভালোবাসা। বাংলাদেশের সকল ডাক্তার না, মাত্র ১০ ভাগ ডাক্তারও যদি এই রকম চিন্তা করতে পারত !!! বদলে যেত বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের চেহারা। স্যালুট তোমাকে "ডাক্তার ভাই", একদিন ঠিক তোমার মত যেন হতে পারে অন্তত এদেশের মাত্র শতকরা ১০ ভাগ ডাক্তার।

Sultan Mahmud
Sultan Mahmud
২০১২.০৩.১৭ ১১:৫২
আশাকরি বাংলাদেশের ডাক্তারগণ এ থেকে শিক্ষা নিবেন।

২০১২.০৩.১৭ ১১:৫৭
After reading this news, I feel, I should explain my feelings. I am Saluting Mr. Baker and Mr. Mariko yeno. Thanks to our bd coworker who are supporting him from their deep of heart. The way of their working is called real love for work, great sacrifice for humanity. Entire Bangladesh has lot's of Dr. all of them are not commercial. Hope "Doctor vie" will get a great & responsible person as future survival.

Saidur Rahman
Saidur Rahman
২০১২.০৩.১৭ ১১:৫৮
We often express dissatisfaction over the performance of our doctors.

abdulla al noman
abdulla al noman
২০১২.০৩.১৭ ১২:২১
আমরা সবাই ভুলে যাই যে দেশ ও দেশের মানুষের কাছে আমাদের কিছু দায় আছে যা আমাদের মনে করিয়ে দিলেন এক পরবাসী

M Jasem
M Jasem
২০১২.০৩.১৭ ১২:৩৭
Government & Doctor Society of our country must take lesson from it but unfortunately we Bangalis always remain as usual.

Md. Amirul Islam
Md. Amirul Islam
২০১২.০৩.১৭ ১২:৪৮
মানুষের জন্যই মানুষ- এটাই তার প্রমান। আমাদের সকল ডাক্তারদের এখান থেকে কিছু শিক্ষা গ্রহন করা উচিত। শুধু টাকা নয়, সেবায় একজন ডাক্তারের মুল আদর্শ হওয়া উচিত।

Fahmida Yeasmin
Fahmida Yeasmin
২০১২.০৩.১৭ ১২:৫৭
Salute Dr.Vai

Sabbir Ibne Sayeed
Sabbir Ibne Sayeed
২০১২.০৩.১৭ ১৩:১৬
Salute to him..................

K arim Howleder
K arim Howleder
২০১২.০৩.১৭ ১৩:৩৬
""""""Dr Md. Golam Rabbani-
২০১২.০৩.১৭ ০৭:৫৯ মনোবল অনেক শক্ত মনে হচছে। উদ্যেগ কে সাধুবাদ জানাই। তবে এই লোক টা চলে গেলে সমস্যা হতে পারে। """"""""""""""""""""
.

K arim Howleder
K arim Howleder
২০১২.০৩.১৭ ১৩:৪৩
2 days ago another comments was here someone from Australia that "Doctor was respected and so on........ etc. My questions what about all peoples? i think he came Australia as refuse thogh he as respect in society. He is person I think always callin "sIR" to any doctor back BD- I think that much quality he has and for this why he cannot assess himself in Australia society..........

Hasib Ahmed Khan
Hasib Ahmed Khan
২০১২.০৩.১৭ ১৪:০০
খুব ভােলা লাগল খবর টা পেড়

মোঃ আবু নাফি ইবনে জাহিদ
মোঃ আবু নাফি ইবনে জাহিদ
২০১২.০৩.১৭ ১৪:৫৫
চমৎকার।

shaker
shaker
২০১২.০৩.১৭ ১৫:০১
মানবতার এক মুক্তিদূত ডাক্তার ভাই । মানবসেবাই জীবনটাকে সপে দিয়াছেন । আর্তপীড়িতদের সেবায় পান পরমান্দ নচেত এতটা বছর ভিনদেশে ভিনদেশীদের সাথে থাকা দুষ্কর । জীবে প্রেম করেছে যেইজন সেই সেবিছে ঈশ্বর

sadat
sadat
২০১২.০৩.১৭ ১৫:৪৩
ডাক্তারদের বাঁশ দেয়ার সুযোগ পেলে কেউ ছাড়ে না... @ shahidur rahman। মওকা যখন পেয়েছেন তখন আপনিও ডাক্তারদের পিণ্ডি চটকাবেন (মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এর মত).... এ আর নতুন কি? আসুন না আমরা সবাই ডাঃ বেকার হয়ে যাই। নিবেন নাকি একটা চ্যালেঞ্জ??? তাহলে আমার মত রক্তচোষাদের প্রকৃতই একটা শিক্ষা হতো!

juliet
juliet
২০১২.০৩.১৭ ১৮:০৯
he is brilliant!!!!!i think he is perfect for nobel prize.

safayet hossen sifat
safayet hossen sifat
২০১২.০৩.১৭ ১৮:৩৪
may allah give all of us this kind of mentality to do somoething like him...
 

Thursday, 15 March 2012

Jochhona Korechhe Aari ~ জোছনা করছে আড়ি


Jochona Koreche Aari- Begum Akhtar

Jochona Koreche Ari Begum Akhtar

 Begum Akhtar - 101 - Bengali Raagpradhaan- JocHona korechhe



Somlata Live!! {Jochona koreche ari}


Somlata Live!! {Jochona koreche ari}

jesseweb13788jesseweb13788·144 videos
593
21,536
Like 39     Dislike 1
Uploaded on Apr 25, 2009
Show: Dada na Didi: Gaaner Big Fight
Channel: ETV Bangla

Artist: Somlata Acharya Choudhury
Track: Jochona koreche ari

Original Track sung by: Behum Akhter.

 jochona koreche ari - জোছনা করছে আড়ি

elomelobhabnaelomelobhabna·20 videos
70
5,614
Like 18     Dislike 0
Uploaded on Dec 25, 2010
by somlata
  • Category

  • License

    Standard YouTube License

 বেগম আখতার, সোমলতা আচার্য চোধুরী 

নচিকেতা 

Wednesday, 7 March 2012

Tchaikovsky: Swan Lake - The Kirov Ballet


Published on Mar 7, 2012 by
In this production of the best loved classical ballet 'Swan Lake' the naturally gifted Yulia Makhalina dances the challenging role of Odette/Odile while the part of Prince Siegfried is danced by Igor Zelensky. This classic Kirov production includes the familiar happy ending in the final act where Siegfried fights and ultimately defeats the evil magician von Rothbart and at dawn is reunited with Odette.

Buy from Amazon (UK):
http://www.amazon.co.uk/gp/product/B000FIHF82/ref=nosim/?tag=warclajaz-21

Buy from Amazon (USA):
http://www.amazon.com/gp/product/B000FIHF82/ref=nosim/?tag=warclajaz-21

Buy from Amazon (FR):
http://www.amazon.fr/gp/product/B000FIHF82/ref=nosim/?tag=warclajaz-21

Buy from Amazon (DE):
http://www.amazon.de/gp/product/B000FIHF82/ref=nosim/?tag=warclajaz-21

http://www.warnerclassics.com/

Category:

License:

Standard YouTube License

Sunday, 4 March 2012

A Simple Thought on the International Women's Day, 2012

A Simple Thought on the International Women's Day, 2012

by Naznin Seamon (নাজনীন সীমন) on Wednesday, March 7, 2012 at 10:48pm ·



      
          The theme of the International Women Day 2012 is: “Empower Rural Women—End Hunger and Poverty.” Without any doubt, this is a very important focus though not sure how women in the third world countries would be or could be benefitted from it. Glancing at the United Nation’s International Women’s Day themes since it started in 1975, violence against women is a reoccurring focus, we may conclude. I have no doubt about the highly qualified people organizing and working for this; however, can’t really help but asking, has violence decreased after all?

          Women have been objectified for a long period of time throughout history despite of hemispheric differences. Men employed various rules to captivate them, to hinder their mental growth, their independence. More than anything, they have caged women using religion as a shield. Women had to follow certain rules set up by men. For most religions and most societies, covering entire body regardless of extreme hot or cold has been one of the prime ones. Women’s roles also have been determined by men as well as the codes of behavior, not to mention the overall attires along with usage of jewelry. Men dictated what they should wear, how they should talk, walk, laugh, sleep, eat, and what not.
          By crossing many hurdles so many great souls that include men too, have brought women into today’s stage. Women are now competing with men, working at the same pace, creating excellent art work, and so on. However, it really pinches our thought if we squeez our eyes to see a little deeper. Aren’t women still being objectified by men and their ruled society? Are women really free now? Has the violation against women stopped in a larger scale? In the threshold of humanity and freedom, where do women really stand today? Is physical abuse only considered to be violence or are there more branches to it?

          Women are still dressing as men want them to; difference is, they think it’s their freedom. So, now instead of covering their entire body they are exposing their body thinking that’s driven by their own choice. So, in the name of being fashionable which is extraneous, they are just satisfying the changed need of men without being aware of it. It’s not men, but women only who really can rectify this abuse.

          Women are being negatively projected, bullied, and pushed down in various ways. This maneuver is unknown to most as there are labels of equal rights, freedom for all, and so on. Until or unless respect can be developed within us for women, freedom can be and will be manipulated. As a result, we see new ways of violating women’s right of which eve teasing, posting sexually explicit pictures, cyber bullying, black mailing, cursing using female body parts are some examples.
          Women all over the world need to be self-conscious about these intrigues. As women have earned economic freedom to some extent, in most cases there’s a facade men are using against them as a part of the same old game.  So, instead of focusing on physical beauty, intellectual growth should be the pivotal concern which only can give the real freedom. We are born with physical beauty; it’s the later one that we need to build on which can protect us and will give us the sense of dignity.


         Let’s cheer up for humanity!

· · Share
নাজনীন সীমন
::
নিউ ইয়র্ক
c২০১২ মার্চ ০৪
::

স্মরণ-সত্য প্রকাশের দায়ে ~ মোহাম্মদ আলী

স্মরণ-সত্য প্রকাশের দায়ে by মোহাম্মদ আলী

হুমায়ুন আজাদের অভাব আজ আমরা গভীরভাবে অনুভব করি। তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, আমাদের কাঁদিয়ে গেছেন। কিন্তু তার ভাষাতত্ত্ব, প্রবন্ধ সাহিত্য, উপন্যাস, কিশোর সাহিত্যের মধ্যে তিনি বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন। যখন তার কোনো রচনা পাঠ করি তাকে স্মরণ করি।

তিনি জীবন্ত হয়ে আমাদের ভেতরে ফিরে আসেন। তাকে ভীষণভাবে অনুভব করি

হুমায়ুন আজাদ জন্মেছিলেন মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরের রাঢ়ীখালে। পদ্মার পিঠ ছুঁয়ে রাঢ়ীখাল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তার বুকের ওপর দিয়ে একটি পিচঢালা পথ চলে গেছে। বোধহয় সেই ব্যথায় তার বুক টনটন করে।
হুমায়ুন আজাদ যেন সেই ব্যথা একসময় অনুভব করেছিলেন। তিনি তার কৈশোর ও যৌবনের কিছু অংশজুড়ে অকৃত্রিম রাঢ়ীখালকে পেয়েছিলেন। তিনি আড়িয়ল বিলের চকচকে রূপালি সরপুঁটি মাছ দেখেছেন। কচুরি ফুলের ঘ্রাণ পেয়েছেন। মাঠে মাঠে সোনালি ধানের ঢেউখেলা বাতাস দেখেছেন। শীতকালে খেজুর রসে সিক্ত পিঠে খেয়েছেন প্রাণভরে।
প্রথম জীবনে লেখাপড়া করেছেন স্যার জগদীশচন্দ্র বোস ইনস্টিটিউশনে, এরপর ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাতত্ত্বের ওপর উচ্চতর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
চাকরি করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বদেশ ছেড়ে বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করা তিনি একদম পছন্দ করতেন না। অভিবাসী বাঙালিদের জীবনযাপন সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'নতুন কৃতদাসের জীবন।'
তাকে খুব কাছ থেকে দেখা এবং তার সঙ্গে একান্ত ঘনিষ্ঠভাবে মেশার আমার সুযোগ হয়েছে। তিনি ঘড়ির কাঁটা ধরে চলতেন। কখনও কোথাও যাওয়ার কথা থাকলে নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে তিনি পেঁৗছতেন। কাউকে কথা দিলে সে কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন।
হুমায়ুন আজাদ কেমন মানুষ ছিলেন? আমার কাছে এ প্রশ্নের উত্তর হলো_ সাধারণত কোনো ঘটনা বা বিষয় যখন আমরা চিন্তা করি তখনই একজন মানুষকে বুঝতে পারি। হুমায়ুন আজাদ চিন্তা-দর্শনের দিক থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের ছিলেন। যেমন ধরুন, একুশে ফেব্রুয়ারি এলে বাংলা ভাষা সর্বস্তরে প্রচলন করার দাবি ওঠে। তিনি বলতেন, মতিঝিলে বাংলার পরিবর্তে ইংরেজি ভাষা ব্যবহৃত হয়। সচিবালয়ে বাংলা ভাষা সম্পূর্ণ গুরুত্বহীন। উত্তরপাড়ায় বাংলায় ভাষা সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। তাহলে বাংলা ভাষা কীভাবে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠালাভ করবে? যারা রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনা করেন তারা যদি মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা, অবহেলা করেন, তাহলে এই ভাষা কখনও সর্বজনীন ভাষারূপে সমাজে প্রতিষ্ঠালাভ করতেন পারবে না।
আমাদের প্রচলিত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা এসব নিয়ে তিনি ছিলেন সমালোচনামুখর। এ দেশের বড় বড় বিদ্যাপীঠকে তিনি খেদ করে 'ফোরকানিয়া মাদ্রাসা'র সঙ্গে তুলনা করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলো যেভাবে মৌলবাদীদের আড্ডাখানায় পরিণত হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষণ করে তিনি এ ধরনের মন্তব্য করেছিলেন।
হুমায়ুন আজাদ একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। শোষণহীন প্রগতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তার স্বপ্নের বাংলাদেশ কবে প্রতিষ্ঠিত হবে?
তিনি সে কারণে লেখার ভেতরে প্রচলিত ধ্যান-ধারণা, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, ভণ্ডামি-কপটতা, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে কলমযুদ্ধ চালিয়েছিলেন।
কিন্তু ঘাতক মৌলবাদীরা তার লেখার সমালোচনা না করে তাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করেছিল।
সত্য প্রকাশের জন্য যেভাবে ব্রুনোকে জীবন দিতে হয়েছিল, হাইফেসিয়াকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল, গ্যালিলিওকে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল, তেমনি হুমায়ুন আজাদকে মৌলবাদের চাপাতির আঘাতে রক্তাক্ত হতে হয়েছে। যদিও তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। কিছুটা সুস্থ হওয়ার কিছুদিন পর একটি গবেষণাকাজে জার্মানিতে গিয়েছিলেন। সেখানে রহস্যজনকভাবে তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা হয়, এর পেছনে মৌলবাদীদের হাত থাকতে পারে।
হুমায়ুন আজাদের অভাব আজ আমরা গভীরভাবে অনুভব করি। তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, আমাদের কাঁদিয়ে গেছেন। কিন্তু তার ভাষাতত্ত্ব, প্রবন্ধ সাহিত্য, উপন্যাস, কিশোর সাহিত্যের মধ্যে তিনি বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন। যখন তার কোনো রচনা পাঠ করি তাকে স্মরণ করি। তিনি জীবন্ত হয়ে আমাদের ভেতরে ফিরে আসেন। তাকে ভীষণভাবে অনুভব করি। কিন্তু জীবন এবং মৃত্যু অবধারিত। তাকে ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আজ সেই অমর একটি বাণীর কথা মনে পড়ে_ 'কোনো কোনো মৃত্যু থাই পাহাড়ের চেয়েও ভারী_ কোনো কোনো মৃত্যু বেলে হাঁসের পালকের চেয়েও হালকা।' হুমায়ুন আজাদের মৃত্যু থাই পাহাড়ের মতো ভারী। তার মৃত্যু বাংলাদেশকে যেভাবে কাঁদিয়েছে; খুব কম মৃত্যুই এভাবে কোনো জাতিকে কাঁদাতে পারে।
কিন্তু হুমায়ুন আজাদের মৃত্যু নেই। তিনি মৃত্যুহীন। তিনি তাঁর সাহিত্য, কর্মময় জীবনের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকবেন।
তার হত্যা প্রচেষ্টাকারীদের একদিন শাস্তি পেতে হবে। রাষ্ট্র ও সরকার তার হত্যা প্রচেষ্টাকারীদের সত্যিকারের বিচার করবে_ এটাই জনগণের প্রত্যাশা। সাম্প্রদায়িকতা পরাস্ত হবে_ একদিন প্রগতিশীলরাই জয়ী হবে।
 

মোহাম্মদ আলী : সাংস্কৃতিক কর্মী
nanditaali@gmail.com